ময়মনসিংহ জেলার ঈশরগঞ্জে রাতের বেলায় কৃষকের ধান কেটে নিল প্রতিপক্ষের লোকজনরা। কৃষিজমি ক্রয়ের প্রায় ২৯ বছর ধরে ভোগ করে আসা ফসলি জমি থেকে গভীর রাতে ওই ধান কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজনরা। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার থানায় এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক আস্তুম আলী খা।
এব্যাপারে সরেজমিন তদন্তে জানা যায়, উপজেলার দরিপাঁচাশি গ্রামের আস্তুম আলী খা প্রায় তিন যুগ আগে সিএ খতিয়ানের মালিক পবন সর্দার এর একমাত্র ছেলে এসএ, আরএস, খতিয়ানের মালিক মফিজ উদ্দিনের কাছ থেকে ৮৮শতাংশ জমি সাব কবলা দলিল মূলে ক্রয় করেন। কিন্তু ২০২০ সালে এসে একই গ্রামের প্রতিবেশি আব্দুল কাদির গংরা ওই জমি তাদের বলে দাবি করেন। বিষয়টি মিমাংসা করতে এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিগন ও ইউনিয়নের পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে নিয়ে সালিশ দরবার করলেও তার কোন প্রকার সমাধান না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আসলে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাঈদা পারভীন কাগজপত্র দেখে কৃষি-জমির মালিক আস্তুম আলী খা কে নিশ্চিত করেন এবং প্রতিপক্ষ আব্দুল কাদির গংদের জমিতে যেতে নিষেধ করেন। কিন্তু সেই নিশেধাজ্ঞা অমান্য করে আব্দুল কাদির গংরা জমি দখলের চেষ্টা করেন। জমির মালিক আস্তুম আলী খা বাদি হয়ে ঈশরগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে চিরস্থায়ী নিশেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা দায়ের করেন। আদালত অস্থায়ী নিশেধাজ্ঞা জারি করেন। পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের লোকজন ময়মনসিংহ জেলা জর্জ কোর্টে আপিল করেন। জেলা জর্জ কোর্ট ঈশরগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের রায় বহাল রেখে আপিল খারিজ করেদেন। ওই পর্যায়ে আব্দুল কাদির গংরা হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট আগের দু’টি আদেশ ৬ মাসের জন্যে স্থগিত করে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার জন্যে আদেশ দেন। আস্তুম আলী খা তার নিজ জমিতে বোরো ধান রোপন করেন। এমতঅবস্থায় ধানক্ষেত পরিচর্যা করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু বুধবার রাত ১টার দিকে প্রতিপক্ষ আব্দুল কাদির গংরা ওই বোরো জমির ধান কেটে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে আব্দুল কাদিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জমির ধান আমি কেটে নিয়েছি। আপনার জমির ধান রাতে কাটলেন কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এড়িয়ে যান।
আরো পড়ুন>>>>ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কৃষকের ধান ক্ষেতে সাদা শীষ কৃষকরা পড়েছে হতাশায়।
বিষযটি নিয়ে জমির মালিক বয়োবৃদ্ধ আস্তুম আলী খা বলেন, আমার ছেলেরা জমিতে ধান রোপন করে এতোদিন পরিচর্যা করে আসছে এখন আব্দুল কাদির ও তার লোকজন ওই ধান রাতের আধাঁরে কেটে নিয়ে গেছে। আমি এর সুষ্টু বিচার চাই।
ঈশরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, রাতে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি এব্যাপারে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।