পাবনা শহরের দিলালপুর মহল্লায় শনিবার দুপুরে জাকাত সংগ্রহ করতে বের হয়ে কয়েকজন ভিক্ষুকের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছুরিকাঘাতে আল্লাদী খাতুন (৫০) নামের এক নারীর নিহত হয়েছে। নিহত আল্লাদীর নিজের কোনো বাড়ি নেই। তিনি শহরে ভিক্ষা করে জীবন চালাতেন। শহরতলির দ্বীপচর মহল্লায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে একদল ভিক্ষুক শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জাকাতের কাপড় সংগ্রহ করছিলেন।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা দিলালপুর মহল্লার বড়বাজার এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় আল্লাদী খাতুনের সঙ্গে অপর এক নারী ভিক্ষুকের কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারামারি শুরু হয়। হঠাৎ পাশে থাকা এক ব্যক্তি ছুটে এসে আল্লাদী খাতুনকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান। এতে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আসমা খাতুন নামের প্রত্যক্ষদর্শী এক ভিক্ষুক বলেন, ঘাতক ব্যক্তি লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি পরে ছিলেন। তিনিও তাঁদের সঙ্গে জাকাত সংগ্রহ ও ভিক্ষা করতেন। তবে কোথায় থাকেন, তা কেউ জানেন না। শহরের কয়েকজন ভিক্ষুকের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, গত শবে বরাতের রাতে আল্লাদী খাতুনের সঙ্গে ওই নারী ভিক্ষুকের কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারছিলেন না। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনাস্থলের পাশে একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজ দেখে ঘাতক ব্যক্তিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে তাঁর বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আশা করছেন খুব শিগগির তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহম্মেদ বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।