ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অসহায় দরিদ্রদের মাঝে এবার বিনামুল্যে ঈদের পোশাক দিচ্ছে মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন। যেখানে রয়েছেন শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা। একে একে তারা আসছেন আর নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দের নতুন পোশাক ও ঈদ সামগ্রী।
তবে এসব কিছুর বিনিময়ে অসহায়দের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে ব্যতিক্রমী এমন আয়োজন করেছে “মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারোবাড়ির উওরবনগাও গ্রামে দুই দিনব্যাপী এ ঈদের ফ্রি হাটটি শুরু হয় সোমবার। প্রথম দিন এ হাটের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান।উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন আয়োজন খুবই বিরল। এর আগে এমন আয়োজন আমি কখনো দেখিনি। মহৎ এই আয়োজনের উদ্বোধন করতে পেরে আমি নিজেকেও গর্বিত মনে করছি। আমার প্রত্যাশা সংগঠনটি অসহায় মানুষের পাশে থেকে সামনে এগিয়ে যাবে।
আজ মঙ্গলবার
দুপুরে শেষ দিনের হাটের উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। এ সময় তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ফ্রি হাট বসিয়ে সংগঠনটি করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের বিনামূল্যে অনেক পণ্য দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। অবশ্যই একটি মানবিক দৃষ্টান্ত তারা স্থাপন করেছে। প্রতিটি সংগঠন ও বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন,তাহলে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কষ্টে থাকতে হবে না। হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটের শুরুতেই রয়েছে মেডিকেল বুথ। যেখানে থার্মোমিটারে তাপমাত্রা মেপে ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করে ঢুকানো হচ্ছে সবাইকে। এরপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিন ফুট দূরত্বে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ঈদ সামগ্রীর স্টল। শ্রেণিভিত্তিক স্টলগুলোতে ছেলেমেয়েদের জন্য প্যান্ট, শার্ট, ফ্রগ, চুড়ি, প্রসাধনী। দুস্থ নারী-পুরুষের জন্য রাখা হয়েছে শাড়ি, লুঙ্গি, সেমাই ও চিনি।ঈদকে সামনে রেখে বিনামূল্যে এসব সামগ্রী পেয়ে খুশি উপকারভোগীরা। সুলাইমান হোসেন নামে এক রিকশাচালক বলেন, হারাদিন যে টেহা কামাই, হেই টেহা তো চাইল-ডাইল কিইন্নাই হারা যায়। পোলাপানের ঈদের পোশাক কইত্তে কিইন্না দিমু, হেই সামর্থ্য নাই গো বাজান। তয় এই হাটে আইয়া মাগনা অনেক কিছুই পাইলাম। অহনা ঈদে বউ পোলাপান লইয়া খাইতেও পারাম আবার পোশাক-আশাকও পরতাম পারাম। যারা দিল হেই বাবারা অনেক বড় অউক। মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি সংগঠক অনিক কুমার নন্দী ঢাকা বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং অসহায়-বঞ্চিত মানুষ আছেন, যাদের ঈদের সামগ্রী ও নতুন পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। তাদের মুখে হাসি ফোটাতে ও ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।