নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে বাতাসের চাপ থাকায় সৃষ্ট ঢেউয়ের কারণে ভেঙে যায় ঝালকাঠির বিষখালী নদীর বাঁধ , বেড়িবাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে পড়ে ডুবে গেছে রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদের অফিসপাড়া, আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ির, ভেসে গেছে কয়েকশতাধিক পুকুরের মাছ। ৪৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভাটার সময় পানি নেমে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেড়িবাঁধটি।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝালকাঠি সদরে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ভেঙে গেছে রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ার বিষখালী নদীর বেড়িবাঁধ।ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং পূর্ণিমার প্রভাবে দুই দিন আগে থেকেই বাড়তে থাকে বিষখালী নদীর পানি। বৃহস্পতিবার নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতায় ওঠে।
নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে বাতাসের চাপ থাকায় প্রবল ঢেউয়ে ভেঙে যায় নদীর বাঁধ। বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদের অফিসপাড়া, আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এতে আতংকে রয়েছেন বাঁধ ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা। বিশেষ করে কাঠালিয়া সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বড় কাঠালিয়া, পূর্ব কচুয়া, লতাবুনিয়া, রঘুয়ার দড়ির চর, সোনার বাংলা, আওরাবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া, ছিটকী ও আমুয়া, ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি, নতুন কলাবাগান, পৌরসভা খোয়াঘাট এলাকা, রাজাপুরের বড়ইয়া, পালট, নিজামিয়া, চরপালট আবাসন, চল্লিশ কাহনিয়া, উত্তমপুর, বাদুরতলা লঞ্চঘাট, মানকিসুন্দর, নাপিতের হাট, ডহরশংকর, মঠবাড়ি এলাকাসহ সুগন্ধা-বিষখালী নদী তীরবর্তী নিন্মাঞ্চলের প্রায় ৪৫টির অধিক গ্রামে পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে অধিক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সকাল থেকেই থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাস বাড়ার সাথে সাথে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্থানীয় আমেনা বেগম বলেন, ‘বিষখালী নদীর অবদা (বাঁধ) ভাইঙা পানি আইয়া ঘর তলাইয়া গেছে। ঘরে থাহা যায় না, গরু-বাচুর উপজেলায় নিয়া রাখছি। চুলায় রান্ধনের কায়দা নাই। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক এনায়েত মোল্লা বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে ত্রাণ চাই না, এই বাঁধটির টেকসই উন্নয়ন চাই। যাতে বন্যার সময় আমাদের দুশ্চিন্তায় পড়তে না হয়। বিষখালী নদীপাড়ের বাসিন্দা আব্দুর রব খান বলেন, ‘ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে আমরা খুবই আতঙ্কে থাকি। বিশেষ করে রাতে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসে থাকি, কখন বাড়িঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়।
বাঁধটি দ্রুত মেরামতের আশ্বাস দিয়ে জেলা প্রশাসক জোহর আলী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি স্থায়ীভাবে নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কাজটি যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত হয়, সে ব্যাপারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।