কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম অতিদ্রুত বাস্তবায়ন ও টিআরএম চালুসহ স্বচ্ছতার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকালে তালার মোবারকপুর উত্তরণ আইডিআরটিতে পানি কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ের’ কার্যক্রম ২০১৭ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্বারা বিশেষ করে তালা উপজেলার পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়িত হওয়ার কারণে বিশাল কপোতাক্ষ অববাহিকার প্রায় ২০ লক্ষ অধিবাসী সরাসরি উপকৃত হয়েছে। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা দূরীভূত হওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকা এখন নিরাপদে আছে। এজন্য এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির কৃতজ্ঞ।
এদিকে জনগণের কাছে পূর্বের দেয়া প্রতিশ্রæতি ও প্রকল্পের সফলতা রক্ষায় সরকার আবারও প্রকল্পটির ২য় পর্যায় অনুমোদন দেয়। গত ১৮ আগষ্ট’২০২০ তারিখ রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পটির নাম ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)’। প্রকল্পটিতে খরচ হবে ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা। সরকারি অর্থায়নে ৪ বছর মেয়াদী প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পটিতে কপোতাক্ষ অববাহিকার জলাবদ্ধতা নিরসন কল্পে টিআরএমকে যুক্ত করে কপোতাক্ষ নদ উজান অংশে যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর হতে মনিরামপুর উপজেলার চাকলা ব্রীজ পর্যন্ত ৭৫ কিমি. এবং নিন্মাংশে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার বোয়ালিয়া হতে কয়রা উপজেলার আমাদী পর্যন্ত ৩০ কিমি. নদী খনন, তীর প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন, নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ ও মেরামত করা, কপোতাক্ষ নদের দুই তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত করাসহ নদের সাথে সংযুক্ত খাল খনন করা কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার কর্তৃক পলি ব্যবস্থাপনা, টাইডাল প্রিজম বৃদ্ধি ও নিষ্কাশন ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৩৫ বছর মেয়াদী জোয়ার-ভাটা নদী ব্যবস্থাপনা (টিআরএম) কার্যক্রম চালানোর এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, একদিকে যেমন টিআরএম চালু করা সম্ভব হয়নি অন্যদিকে পলি জমে নদী আবারও ভরাট হতে শুরু করেছে। বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধও নড়বড়ে ও দুর্বল হয়ে পড়েছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিসহ বিল ব্যবস্থাপনায় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরণের চরম বিশৃঙ্খলা। তাই প্রকল্পের ডিজাইন অনুযায়ী নদী খনন জরুরী হয়ে পড়েছে। কারণ নদী দ্রæত পলি ভরাট হয়ে পুনরায় মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। সে কারণে সংস্কার পূর্বক অতিদ্রুত টিআরএম চালু এবং গুরুত্ব দিয়ে সরকারের “অশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা” এর আলোকে উক্ত প্রকল্পের আওতায় দাবীদার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হোক এটাই জনগণের দাবী ।
এমতাবস্থায় কপোতাক্ষ অববাহিকার অধিবাসীদের জীবন-জীবিকা যাতে অব্যাহত থাকে এবং স্বচ্ছতার সাথে কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নে জরুরীভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। পানি কমিটি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার, উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, পানি কমিটি নেতা শফিকুল ইসলাম, উত্তরণ কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সানা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।