November 24, 2024, 10:28 am
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

পিকে হালদারের দূর্নীতিতে উঠেছে পাঁচ প্রভাবশালীর নাম

ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, মে ১৭, ২০২২
  • 477 দেখুন

আর্থিক খাতে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত পি কে হালদারের দুর্নীতি ও হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের নেপথ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে বলে দুর্নীতি কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক খাতে তাঁর দুর্দান্ত প্রতাপ ও একচ্ছত্র ক্ষমতার উৎস ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় তিন কর্মকর্তা।

জানা গেছে, পি কে হালদারের অবিশ্বাস্য জালিয়াতিতে পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বেসরকারি খাতের প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। এখন পর্যন্ত তিনি আড়ালে আছেন। সহযোগী হিসেবে আরও একজন ব্যবসায়ী ও সাবেক একজন অ্যাটর্নি জেনারেলের (প্রয়াত) নামও জানতে পেরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই রাঘববোয়ালকে খুঁজে বের করতে দুদকের তদন্ত অব্যাহত আছে। দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর দুর্নীতির মূল সহযোগীদের মুখোশ উন্মোচন করতে চায় দুদক।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও দুদকের ৩৫ মামলার আসামি পি কে হালদারকে গত শনিবার (১৪ মে) ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। তিনি ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফাস ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে ওই ৩৫ মামলায়।

দুদকের তদন্তে পি কে হালদারের একচ্ছত্র ক্ষমতার উৎস হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর, এস এম মনিরুজ্জামান ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের নাম উঠে এসেছে। তদন্তে শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেটের পরিচালক (অর্থ) আরেফিন শামসুল আলামিনের নামও এসেছে।

জানা গেছে, এরই মধ্যে পি কে হালদার ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দুর্নীতির নেপথ্যে থাকা কিছু ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন। দুদক আইনি প্রক্রিয়ায় ভারত সরকারের কাছ থেকে তাঁর ওই জবানবন্দি সংগ্রহ করবে বলে জানিয়েছে।

গতকাল সোমবার (১৬ মে) দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় যত দ্রুত সম্ভব ভারত থেকে পি কে হালদারকে ফেরত আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পি কে হালদারের দুর্নীতির পেছনে যাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাঁরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

এই দুর্নীতির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের সম্পৃক্ততার অভিযোগ থাকলেও কেন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না- এ প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, তাঁদের দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

জানা গেছে, দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পি কে হালদারের ক্ষমতার উৎস হিসেবে এস কে সুর ও শাহ আলমের নাম উল্লেখ করেছেন। জবানবন্দিতে পি কে হালদারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ওই দুই কর্মকর্তার সখ্য ও দুর্নীতিতে যোগসাজশ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন তিনি।

তিনি জানান, সর্বদাই তাঁদের সুনজর ছিল পি কে হালদারের প্রতি। এর বিনিময় মূল্যও ছিল অনেক। একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনার সময় ওই দুই কর্মকর্তা বাংলাদেশ ব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পি কে হালদারের অর্থ লোপাটের ঘটনার সময় শাহ আলম বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিএফআইএম (ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড মার্কেটিং) বিভাগের জিএমের দায়িত্বে ছিলেন। পরে তিনি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে শাহ আলমকে প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা দেওয়া হতো। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ থেকে ইন্টারন্যাশাল লিজিংয়ের কার্যক্রম বছরে দু’বার নিরীক্ষা হতো। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সেই রিপোর্ট নিজের মতো তৈরি করিয়ে নিতেন পি কে হালদার।

২০১৫ থেকে ‘১৮ সাল পর্যন্ত দুই সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট টিমকে প্রতিবারই ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এর বিনিময়ে অডিট টিম ইতিবাচক প্রতিবেদন দিয়েছিল। ২০১১ সালে পি কে হালদার রিলায়েন্সের এমডি ছিলেন। মূলত ওই সময় থেকেই তাঁর অপকর্ম শুরু হয়। তিনি ইচ্ছামতো গ্রাহকদের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই এক দিনের মধ্যে ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করানোর ব্যবস্থা করে আত্মসাৎ করতেন। অনেক সময় গ্রাহক জানতেনও না যে তাঁর নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে। এভাবে তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ করেন।

সূত্র জানায়, পিপলস লিজিংয়ের অর্থিক ভিত ধ্বংস করে দেওয়ার পেছনে একাধিক ব্যাংকার ও ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাটে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ওই দুই কর্মকর্তা ও দেশের শীর্ষ পর্যায়ের একজন ব্যবসায়ীর নাম জানা গেছে। দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী সম্প্রতি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য দিয়েছেন।

‘অর্থ ফেরত আনা খুব জটিল’:দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, পি কে হালদারের বিষয়ে কমিশনে বৈঠক হয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে কমিশন থেকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে একটি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩৪টি মামলা মানি লন্ডারিং ইস্যুতে অনুসন্ধানাধীন। এর মধ্যে কিছু মামলা চার্জশিট পর্যায়ে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং কিছু নতুন মামলাও করা হবে। যে মামলার চার্জশিট হয়েছে, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করানো হয়। আসামিকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত আনতে ভারতের ইন্টারপোল ডেস্কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারত থেকে তার অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি খুব জটিল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102