নতুন স্মার্টফোন কেনার পর ফেসবুকে সব সময় সক্রিয় থাকতেন স্ত্রী। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মন কষাকষি হয় স্ত্রীর। আর তারপরই বিষ খেয়ে আত্নঘাতী হলেন ৩৩ বছরের মামণি অধিকারী। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ভীমপুর থানার কুলগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া এলাকায়। এরই মধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ১৬ বছর আগে ভীমপুরের শুকদেব অধিকারীর বিয়ে হয় মামণির। শুকদেব পেশায় অটোচালক ওই দম্পত্তির পুত্রসন্তান দশম শ্রেণির ছাত্র। কিছু দিন আগে একটি স্মার্ট ফোন কিনেছিলেন শুকদেব। তাতে নিজের নামে একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। স্বামীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে থেকেই নাকি স্ত্রী ফেসবুক চালাতেন। এরপর ক্রমশ ফেসবুক নেশায় পেয়ে বসে তাকে। দিনের বড় অংশই তিনি ফেসবুকে কাটাতেন বলে স্বামীর অভিযোগ। তা নিয়েই শুরু হয় ঝগড়া।
জানা গেছে, গত ৩০ মে স্ত্রীর ফেসবুক চালানো নিয়ে ঝগড়া করেন শুকদেব। কথা কাটাকাটির পর অটো নিয়ে বেরনোর সময় স্ত্রীকেও তার বাপের বাড়ি রেখে আসতে চান শুকদেব। অটোতে উঠলেও মাঝ রাস্তাতে নেমে পড়েন মামণি। জানান, একাই বাপের বাড়ি যাবেন। এরপর শুকদেব নিজের কাজে চলে যান। তবে পরে বেতানায় শ্বশুরবাড়িতে ফোন করে খোঁজ নিয়ে শুকদেব জানতে পারেন স্ত্রী সেখানে যাননি। তার পর খোঁজ খবর শুরু করেন তিনি। পরে বাড়ি ফিরে দেখেন স্ত্রী বাড়িতেই অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। চিকিৎসার পর গত ২ জুলাই হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হয় মামণিকে। কিন্তু বাড়িতে ফিরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর গত ৪ জুলাই আবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান।
সুকদেবের দাবি, আমরা চিকিৎসককে বলেছিলাম সুস্থ হওয়ার আগে কেন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা গুরুত্ব দেননি। ঠিক মতো চিকিৎসা হলে স্ত্রীকে বাঁচাতে পারতাম। তিনি আরও বলেন, ওই দিন ফেসবুক চালানো নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। কিন্তু তার জন্য স্ত্রী এত বড় পদক্ষেপ নিবে বুঝতে পারিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।