কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার নদের মুড়িয়ার ঘাটে খেয়া পারাপারের নৌকা ডুবে এক গৃহবধু নিখোঁজ রয়েছে। নৌকা ডুবির ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে। নিখোঁজ গৃহবধু উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানীর কুটি গ্রামের নূর মোহাম্মদের স্ত্রী নালো বেগম। নদে নিখোঁজ নারীর মরদেহ উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্যের একটি ডুবরী দল বিকাল তিনটা থেকে কাজ করছেন। তবে বিকাল পাঁচটা পর্যরন্ত ওই নারীর দেহের সন্ধান পায়নি ডুবুরী দল।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খন্দকার মোদাসসির বিন আলী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা জাহান। বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি জানান, শনিবার সকালে নালো বেগম নৌকায় নদ পাড়ি দিয়ে ওপারে বামনডাঙ্গার কুটিরচরে ছোট বোন নীলিমার বাড়িতে বেড়াতে যায়। রবিবার ১২টার দিকে নৌকায় সে ফিরছিল। প্রায় ৩০ মণ ধান, ১৬ মণ পাট, ২টি ঘোড়াসহ গাড়ি, ৩০ জন মানুষ বোঝাই নৌকাটি ওপারের ঘাট থেকে রওনা দিয়ে কিছুদুর এগিয়ে ডুবে যায়। অন্যরা সাতরে তীরে পৌছে জীবন রক্ষা করতে পারলেও ডুবে নিখোজ হয়ে যায় নালো বেগম। স্থানীয়রা অনেক খোজাখুজি করেও তাকে পায়নি। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে রংপুর থেকে ডুবুরি দল এসে তাদের সাথে যোগ দেয়।
নিখোজ গৃহবধুর ফুফাত ভাই ওছমান গণি জানান, আমরা ভেবে পাচ্ছি না চিরচেনা দুধকুমারে ডুবে প্রাণ যাবে তার। আমরা নদ তীবর্তী মানুষরা এভাবেই সর্বদা নদ পাড়ি দিয়ে প্রয়োজনে এপার-ওপারে যাতায়াত করি। এই প্রথম এখানে এরকম একটি দুর্ঘটনা ঘটল। শুনেছি যখন নৌকাটি ডুবে যায় তখন নদে তেমন ¯্রােত ছিল না। সম্ভবত ধান, পাট, মানুষের ভরে তলিয়ে গছে নৌকাটি। তার মৃত্যুতে পরিবারটি ছন্নছাড়া হয়ে গেল। কারন সেই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি। তার স্বামী নুর মোহাম্মদ শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় গ্রামে একটি চায়ের দোকান দিয়ে তার আয়ে সংসার চালান নালো বেগম।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খন্দকার মোদাসসির বিন আলী জানান, খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থলে সরেজমিন গিয়ে যতটুকু জেনেছি অতিরিক্ত মালামাল বোঝাইয়ের কারনে সম্ভবত নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। ঘাট ইজারাদারকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এখনও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তার মরদেহ উদ্ধারে অভিযান চালচ্ছে। আপাতত দরিদ্র ওই পরিবারের কয়েকদিনের খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
#