রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিদগ্ধ পণ্ডিত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ইতিহাসবিদ ইমেরিটাস প্রফেসর ড. এ. বি. এম. হোসেন আর নেই। আজ রাত ২ টায় ঢাকার স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তাঁর মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.ফজলুল হক। তিনি বলেন, প্রফেসর এ বি এম হোসেন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। আমরা তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আজ বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরিটাস ও ইসলামী শিল্পকলা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। এবিএম হোসেন ১৯৩৪ সালে কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলায় ধামতী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুমিল্লার দেবীদ্বার হাই স্কুলে। পরে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক সম্মান ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
তাঁর সাফল্যমন্ডিত শিক্ষানুরাগে মুগ্ধ হয়ে তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁকে মেধাবৃত্তি দিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করেন। সেখানেই তিনি ১৯৫৮ ও ১৯৬০ সালে ইতিহাস ও ইসলামিক আর্কিওলজিতে যথাক্রমে বিএ অনার্স ও পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করে মেধার স্বাক্ষর রাখেন।
১৯৬০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা আরম্ভ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি পূর্ণ প্রফেসর পদে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে তিনি বিভাগীয় প্রধান, কলা অনুষদের ডীন ও প্রশাসনিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছিলেন। তিনি ২০০১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রফেসর এমিরিটাস হিসাবে সম্মাননা প্রাপ্ত হন।
তাঁর নিবিড় গবেষণার বিষয়বস্তু ইসলামী শিল্পকলা হলেও তাঁর মূলধারার বিষয় ছিল মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা।তাঁর লিখিত গবেষণা গ্রন্থের সংখ্যা অদ্যাবধি ১১টি। ১৯৭৭ সালে নরওয়েজিয়ান পার্লামেন্টে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য গঠিত বোর্ডে এ-ই বিখ্যাত পন্ডিতকে মনোনীত সদস্য পদে নির্বাচিত করেন। তাছাড়াও তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ও বাংলা একাডেমির সম্মানিত আজীবন ফেলো।