পরিবারের সবারই পেশা ছিল দিনমজুরি ও রিকশা চালানো। দিনমজুরি ও রিকশার আয় রোজগার দিয়েই চলত সংসার। হঠাৎ তারা পুরনো পেশা ছেড়ে দিয়ে নামেন ইজিবাইকসহ বিভিন্ন চুরিতে। আর এই চুরির নেতৃত্ব দেন আমিনুল ইসলাম ওরফে ইয়াসিন মিয়া (৪৫)। এই চোর চক্রের মালিকাধীন বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস ছাড়াও রয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা।
পাশাপাশি ঈশ^রগঞ্জ ও নান্দাইল ছাড়াও তাদের রয়েছে গফরগাঁও উপজেলায় একটি অটোরিকশা সো-রুমের শেয়ার। চিহ্নিত এই চোরের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের আতকাপড়া গ্রামে। তার বাবা ফরিদ মিয়াসহ দুই ভাই রোমান মিয়া ও জামান মিয়া এবং পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের ধনিয়াকান্দি গ্রামের শ্বশুর আবু ছায়েদের ছেলে শ্যালক তোফাজ্জল হোসেনসহ (৩০) পরিবারের সকলেই ইজিবাইক চোর।
চালককে অচেতন করে এমনকি হত্যা করেও হাতিয়ে নেয় ইজিবাইক। পরিবারের প্রায় সকলেই কোনো না কোনো ভাবে এ পেশায় জড়িয়ে যায়। বারবার ধরা পড়লেও বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। ফের দাপটের সাথে এ ধরণের অপকর্ম করেন। ফলে অল্প দিনেই নিজেদের ভাঙাচোরা বসতঘরের পাশে উঠেছে ঝকঝতে আধাপাকা বাড়ি। পরিবর্তন ঘটে পুরো পরিবারের।
এখন পেশা পরিবর্তন করে নামে গরু চুরিতে। গত এক সপ্তাহে দুই উপজেলার ২০টি গরু চুরির ঘটনায় এই দুই পরিবারের লোকজন জড়িত বলে প্রকাশ হয়েছে। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আশ্বাসে শেষ রক্ষা হয়। এ ঘটনায় পিতা-পুত্রসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তারসহ তিনটি গরু উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। থানায় থাকা ইয়াসিনের শ্যালক তফাজ্জল জানায়, গরু চুরির সকল কিছুই করেন ইয়াসিন ও তার ভাই জামাল মিয়া। দুইজনই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে গভীর রাতে কৃষকের গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করে পিকআপে করে নিয়ে যায়। এ সব কাজে তিনি নিজে শুধু সহযোগিতা করেন। তিনি এইবারেই প্রথম চারটি গরু চুরির সাথে জড়িত। এর আগে চোর ছিলেন না।
ইয়াসিন চোরের আতকাপাড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পৈত্রিক ঘরটির জারাজীর্ণ থাকলেও পাশেই কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করা হয়েছে পাকাঘর। যা দেখে প্রতিবেশীরা ছাড়াও এলাকার লোকজন হতবাক হয়ে যায়। অনেকেই বলেন, আগে শুনতেন চোরের বাড়িতে দালান উঠেনা। এখন শুধু দালানেই নয় বিভিন্ন সড়কে চলমান বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস ছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা রয়েছে তাদের।
রয়েছে পাশের গফরগাঁও উপজেলায় একটি অটোরিকশা সো-রুমের শেয়ার। নান্দাইল থানা সুত্রে জানা গেছে, নান্দাইল থানা ছাড়াও আশপাশের বেশ কয়েকটি থানায় তার নামে রয়েছে একাধিক চুরির মামলা।