প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে কাব স্কাউটস শিশুদের জন্য সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পদক “জাতীয় শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড” অর্জন করেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের স্কাউটস গ্রুপের ১৩ জন শিক্ষার্থী।
২০১৮ খ্রিঃ এ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত হয় বার্জিস আলী, শামামাহ আলী, রাইয়ান জান্নাত এশা মো.ফাহিম বিন ফারুক, মোঃ আরিফ বিল্লাহ, মোঃ আবদুল্লাহ, মোঃ আব্দুল্লাহ আল শান্ত, মোঃ তৌহিদ মোক্তার এবং ২০১৯ খ্রিঃ-এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মোঃ শিপন হাসান সাফি, সিফাত আফজাল, মোঃ সাদমান শিহাব, রাফিহা তাসনিম রিমু এবং মোঃ আমান উল্লাহ আমান।
মনোনীত কাবরা অতিসত্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবে। ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্কাউটস গ্রুপের গ্রুপ স্কাউট লিডার নিলুফা ইয়াছমিন জানান, তারা যেন এতটুকুতেই থমকে না দাঁড়িয়ে পরবর্তীতে অন্যান্য কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত হয়ে দেশ ও সমাজে অবদান রাখার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করবে।
ইউনিট লিডার মোঃ আজিমউদ্দীন জানান, জাতীয় শাপলা কাব পেয়ে কাব দল আমাদেরকে গর্বিত করেছে। আমরা আশাবাদী তারা আগামীতেও কঠোর অনুশীলন ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে। ইউনিট লিডার মোছাঃ মোসাররাত জানান, তাদের এই সাফল্যে আমি সত্যিই আনন্দিত।
ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্কাউটস গ্রুপ এর সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী “জাতীয় শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড” অর্জন করায় বাংলাদেশ স্কাউটস, সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলার স্কাউটস লিডার মোঃ আনোয়ার হোসেন ও সহ জেলা কমিশনার মোঃ মোজাহারুল ইসলাম এবং জেলা কাব স্কাউটস লিডার মোঃ মামুনুর রশিদ করিম খুবই গর্বিত।
তারা বলেন আমাদের প্রশিক্ষনে তারা জাতীয় শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আমাদেরকে গৌরবান্বিত করেছে। তাদের সকলের প্রতি রইল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্কাউটস গ্রুপের সভাপতি ও ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সৈয়দপুরের অধ্যক্ষ মোঃ শাবাহাত আলী সাব্বুর সাথে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস এ অর্জন তাদেরকে দেশপ্রেমিক ও মানবতাবাদী নাগরিক হতে অনুপ্রেরণা জাগাবে।
যাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিক সহযোগিতায় এই সাফল্য অর্জন হয়েছে তাদের সকলের প্রতি রইল শুভকামনা ও ভালোবাসা। তিনি আরও বলেন, তাদের এ অর্জন তাদেরকে যেমন আত্মপ্রত্যয়ী করবে। তেমনি দেশ সমাজ ও মানবতার প্রতি অনেক বেশি দায়িত্ববান করবে।
উল্লেখ্য যে, একজন শিক্ষার্থীকে “জাতীয় শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড” অর্জনের জন্য বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করতে প্রায় ১৮ থেকে ২৪ মাস লাগে । প্রথম ধাপ হচ্ছে সদস্য ব্যাজ অর্জন। এই ব্যাজ অর্জনের জন্য ৩ মাস নানা ধাপ অতিক্রম করে পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। এরপর তাঁরাব্যাজ অর্জনের জন্য ৪-৬ মাস নিবিড় ভাবে অংশ নিতে হয় বিভিন্ন স্কাউট প্রশিক্ষণে।
তারপর চাঁদব্যাজ অর্জনের জন্য চলে নিবিড় প্রশিক্ষণ। চাঁদব্যাজ অর্জনের পর শিক্ষার্থীদেরকে তৈরি করা হয় চাঁদতাঁরা ব্যাজের জন্য। এতে তারা আবার ৪-৬ মাস আপন শক্তিসহ নানা শাখা প্রশাখায় প্রশিক্ষণ নেয়। সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণের সময় সাঁতার অবশ্যই শিখতে হবে সাঁতার বাধ্যতামূলক।
ক্যাম্পিং কার্যক্রমের মধ্যে কাব স্কাউটিং এর পুরো সময় অন্তত ১টি কাব কর্নিভাল, ১টি কাব অভিযান, ২টি কাব হলিডে, ১টি স্কাউটস ও ১টি উপজেলা, জেলা, আঞ্চলিক এবং জাতীয় ক্যাম্পুরীতে অংশগ্রহণ করে নিজেদেরকে শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ডের জন্য প্রস্তুত করতে হয়। সবশেষে শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ডের জন্য চলে ৩ মাসের নিরবিচ্ছিন্ন অনুশীলন।
এ অনুশীলনে সাফল্য অর্জনের পরেই “শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড” এর জন্য মনোনীত হয়। স্কাউটসের যাবতীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা যেমন আত্মপ্রত্যয়ী হতে পারে, তেমনি অসহায় ও দুর্ঘটনাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রশিক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব সমাজ ও দেশ গঠনে প্রেরণা পেয়ে থাকে। যা একজন শিক্ষার্থীকে মানবিক চেতনায় গড়ে উঠতে উজ্জীবিত করে।