ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রায় ৬৫ বছরের বৃদ্ধা-মা ছাহারা খাতুনকে সম্পওির জন্য মানসিক নির্যাতন অব্যাহত রাখায় এক নরপশুর ছেলের অত্যাচারে বিষপানে আত্মহত্যা করছে “মা”আত্মহননে প্ররোচিত করার অভিযোগে পুত্র ছায়েদ আলী ও পুত্রবধূ ফাহিমা আক্তারকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার রাতে ভালুকা মডেল থানায় ওই মামলাটি দায়ের করা হয়। মৃত মা ছাহারা খাতুনের মেয়ে কুলসুম আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ঘটনাটি উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের কৈয়াদী গ্রামের। এদিকে,মৃত মায়ের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য আজ মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে এবং ছেলে ছায়েদ আলীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ।
থানা ও স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা যায়, উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের কৈয়াদী গ্রামের আবদুল হালিম যথেষ্ট জমিজমাসহ স্ত্রী ছাহারা খাতুন, ছেলে ছায়েদ আলী ও তিন মেয়েকে রেখে দুই বছর আগে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলে ছায়েদ আলী ভরণপোষণের বদলে অত্যাচার করায় এবং মাকে মা বলে সম্বোধন না করায় ছাহারা খাতুন তার মেয়েদের বাড়িতে বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
পাশাপাশি তিনি স্বামীর সম্পত্তি থেকে তার মেয়েদের ওয়ারিশ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলেকে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু, মায়ের এইসব কথা আমলেই নিচ্ছিলেন না ছায়েদ আলী। এমতাবস্থায় গত ২৮ জুলাই পরিবারের সকলের উপস্থিতিতে সামাজিক সালিসে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে ছেলে ছায়েদ আলী মাকে তার বাড়িতে (ছাহারার স্বামীর বাড়ি) নিয়ে যান।
সালিসে কথা ছিল বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি ঈদের পর ভাই বোনদের মাঝে বণ্টন করে দেওয়া হবে। তবে, বাড়িতে নিয়েও ভরণপোষণ না দেওয়াসহ মায়ের সাথে খারাপ আচরণ অব্যাহত ছিল ছেলে ও পুত্রবধূর। এদিকে, স্বামীর বাড়িতে অবস্থানকালে ছেলে ও পুত্রবধূর আচরণে ক্ষুদ্ধ মা ছাহারা খাতুন গতকাল সোমবার (৩ আগস্ট) ঘটনার দিন সকালে বিষপানে আত্মহননের পথ বেছে নেন।
পরে, খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ সোমবার বিকেলে ওই বাড়ি থেকে ছাহারা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে।
মামলার বাদী কুলসুম আক্তারের অভিযোগ, ছায়েদ আলী মাকে খুবই অত্যাচার করত। মাকে মা বলে ডাকত না। ছায়েদ আলী আর স্ত্রীর অত্যাচারেই তার মা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ভালুকা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, বাদীর এজাহারে মামলা নেওয়া হয়েছে এবং মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছায়েদ আলীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।