মযমনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনার মদন উপজেলার উচিতপুর হাওরে নৌকাডুবিতে নিহত ১৮ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার কোণাপাড়া ঈদগাহ মাঠে ওই গ্রামের ১২ জনের জানাজা একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাদের মরদেহ দাফন কাজ সম্পূর্ণ করা হয়।
নিহতদের মধ্যে ১৬ জনই ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বাসিন্দা। বাকি দুজনের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। একই পরিবারের আটজনের মধ্যে সাতজনকে একসাথে পারিবারিক কবরস্থানে এবং পরিবারের অভিভাবক মাদরাসায়ে মারকাজুস সুন্নাহর মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমানকে মাদরাসা প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়েছে।
এছাড়া নিহত অন্যদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সকাল ১১টায় গৌরীপুরের নিহত দুজনকে দাফন করা হয়েছে। এর আগে জানাজার আগে নিহতদের স্বজনসহ উপস্থিত হাজারো মানুষের বুকফাটা আর্তনাদ আর চোখের পানিতে ভারি হয়ে উঠে জানাজাস্থল। বাসিন্দারা বলছেন, একসঙ্গে এত লাশ এর আগে দেখেনি গ্রামবাসী।
নিহতরা হলেন- মাদরাসায়ে মারকাজুস সুন্নাহর মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান (৪৫), তার দুই ছেলে হাফেজ মাহবুবুর রহমান আসিফ (১৫), মাহমুদুর রহমান (১২), ভাগ্নে রেজাউল করিম (১৫), ভাতিজা জোবায়ের (২০), জোনায়েদ (১৭), ভাতিজি লুবনা (১৩), জুলফা (৭), চরখরিচা গ্রামের কৃষক ইসা মিয়া (৪০), তার ছেলে শামীম (১০), কোনাপাড়া গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম (৩৮), হামিদুল (৩৫), সাইফুল ইসলাম রতন (৩০), জহিরুল ইসলাম (৩৫), রাকিবুল (২২) চরগোবিন্দপুরের তালেব মেম্বারের ছেলে শহিদুল (৪০), গৌরীপুর উপজেলার ধোপাজাঙ্গালিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে শফিকুর রহমান (৪০) ও তার ছেলে সামাআন (১০)।
উল্লেখ্য, বুধবার ময়মনসিংহ সদরের সিরতা ইউনিয়নের ‘মাদরাসায়ে মারকাজুস সুন্নাহ’র মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে নেত্রকোনার মদন উপজেলার ‘মিনি কক্সবাজার’খ্যাত উচিতপুর হাওরে ঘুরতে যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ৪৮ জনের একটি দল।
দুপুরে উচিতপুর পৌঁছে হাওরে ভ্রমণের জন্য নৌঘাট ছেড়ে যাওয়ার কিছু পরেই হাওরে ডুবে যায় তাদের ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি। খবর পেয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। একে একে উদ্ধার হয় ১৭টি মরদেহ। বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার করা হয় আরও একজনের মরদেহ।