ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাচ্ছেন না নির্যাতিতা অন্তসত্বা এক অসহায় নারী। স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আট মাসের অন্তসত্বা উপজেলার বিলডোরা ইউনিয়নের আতুয়াজঙ্গল গ্রামের মৃত কুদ্দুছ এর কন্য শিরিনা খাতুন (৩৩)। কিছুতেই বিচার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী ওই নারী।
স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রাপ্ততথ্য সূত্রে জানা যায়, বিলডোরা ইউনিয়নের আতুয়াজঙ্গল মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত সাহেদ আলীর পুত্র সিরাজ আলী (৪৫) ঘরে স্ত্রী সন্তান রেখে দীর্ঘদিন যাবত শিরিনা খাতুনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে বিয়ের প্রলোভনে শাররিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এতে শিরিনা খাতুন অন্তসত্বা হয়ে পরে। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালীরা হস্তক্ষেপ করেন। পরে স্থানীয় সালিশ দরবারের সিদান্ত অনুয়ায়ী এফিডেভিট মূলে তিন লক্ষ টাকা দেন মোহর ধার্য্য করে দশ হাজার টাকা ওয়াশিল ক্রমে প্রথম স্ত্রীর অনুমতিক্রমে হুজুর দ্বারা শিরিনা খাতুনের সাথে সিরাজ আলীর দ্বিতীয় বিবাহ সম্পন্ন করা হয়।
চতুর সিরাজ আলী শিরিনাকে স্ত্রীর মর্যদা দিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর বাড়ি থেকে অন্তসত্বা নারীকে মারপিট করে বাহির করে দেন। এলাকাবাসী ও স্বজনরা অন্তসত্বা আহত শিরিনাকে উদ্বার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।
এ ঘটনার বিষয়ে শিরিনা খাতুন বলেন, সিরাজ আলীর বিরুদ্ধে হালুয়াঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। সুষ্ঠ বিচারের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের দারস্থ হয়েছেন। গর্ভের সন্তানের পিতৃ পরিচয় চান তিনি।
স্থানীয় প্রভাবশালী বিলডোরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হীরা রঞ্জন মিত্র প্রথমে লোকচক্ষুর অন্তরালে বিশ-ত্রিশ হাজার টাকায় গর্ভের সন্তানটিকে নষ্ট করাসহ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।
পরে বিষয়টি এলাকায় জানা জানি হলে হীরা রঞ্জন মিত্র’র পরামর্শে বিজ্ঞ নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে এফিডেভিট মূলে তিন লক্ষ টাকা দেন দেনমোহর ধার্য্য করে দশ হাজার টাকা ওয়াশিল ক্রমে হুজুর দ্বারা বিবাহ সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে সিরাজ আলী বলেন, শিরিনা খাতুনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে শাররিক সম্পর্ক গড়ে উঠে তার। শিরিনা বর্তমানে ৮ মাসের অন্তসত্বা। সম্প্রতি তিনি বিয়ে করেছেন। স্ত্রীর প্রতি ক্ষোভে তিনি মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় হীরা রঞ্জন মিত্র এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, তার পরামর্শে এফিডেভিট মূলে বিবাহ হয়েছে। বর্তমানে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বিবাদ চলমান থাকায় শিরিনা খাতুন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার নামে মিথ্যা প্রপাগন্ডা চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন, ঘটনাটি গ্রাম্য আদালতের পরিপন্থি বিদায় তিনি উক্ত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন নি। এ বিষয়ে নির্যাতিতা নারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, অন্তসত্বা নারীর অভিযোগটি পেয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করেছেন। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান।