মানুষকে বিষমুক্ত শাকসবজি খাওয়াতেন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী, টাঙ্গাব, পাঁচবাগ ইউনিয়নের কিষান-কিষানিরা। দীর্ঘদিন যাবত বালাইনাশক ছাড়াই নিরাপদ সবজি আবাদ করছেন তারা। এতে উৎপাদন একটু কম হলেও মানুষকে বিষমুক্ত শাকসবজি খাওয়াতে পারছেন- এই ভেবে গর্বিত ছিলেন তারা।
গফরগাঁওয়ে সবজির আবাদের সুনাম ছড়িয়ে দেশ জুড়ে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ উপজেলার সবজি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। চলতি বন্যা এ উপজেলায় সবজির বিশাল ক্ষতি হওয়ায় দাম বেড়ে গেছে সবজির। বন্যার কারণে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকদের এখন মাথায় হাত।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বন্যায় ২৫ হেক্টর জমির সবজি, ২৩ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ও প্রায় ১০ হেক্টর জমির আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার চরআলগী, গফরগাঁও, পাঁচবাগ, নিগুয়ারী, পাইথল, যশরা ও পৌরসভাসহ প্রায় ১৫টি ইউনিয়নের ৫৮ হেক্টর জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার বেশি।
চরআলগী গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া বলেন, বন্যায় আমার ৮০ শতক জমির চিচিংগা, চাল কুমড়া, মিষ্টি লাউসহ বিভিন্ন সবজির যে ক্ষতি হয়েছে সে ক্ষতি কিভাবে উঠাব সে চিন্তায় এখন রাতে ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মরিচ চাষী ফজলু মিয়া বলেন, বন্যায় আমার ৩০ শতক জমির সব মরিচ গাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে বাজারে দুইশত টাকা কেজি কাঁচামরিচ এখন আমি দিশেহারা।
কৃষক রিপন মিয়া বলেন, প্রতি বছর আমি ছয়-সাত বিঘা জমিতে পেপে, চালকুমড়া, ধুনদুল, ঢেড়শ, বরবটি, করলা সবজি আবাদ করে থাকি। এবারও করেছিলাম তবে বন্যার কারণে সব তলিয়ে যাওয়া বিপদেই পরেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ভাসমান বীজতলা ও চলতি বন্যায় যেসব সবজি চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রণোদনা দেয়াসহ নতুনভাবে সবজি উৎপাদনের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। তিনি জানান, বন্যায় এ উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।