একজন গরিব অসহায় লোকের প্রায় ৭০ বছরের দখলে থাকা ঐ দোকান ভিটি এক প্রভাবশালীকে টাকার বিনিময় বন্দোবস্ত দেওয়া হয়।প্রভাবশালীরা ঐ জমিতে দোকানঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।তৎকালীন সময়ে কর্মরত তহসিলদার,উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও এসিল্যান্ড এই অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত বলে জানান এলাকাবাসী।
স্হানীয়রা জানান সরকার ছিন্নমূল অসহায় মানুষের মাঝে সরকারের ১ নং খাস খতিয়ানের দোকান ঘর বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য নীতিমালা করলেও লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের ফজুমিয়ারহাট বাজারের খাস দোকান ভিটির জমি বন্দোবস্তে এই নীতিমালা মানা হয়নি।নতুন ১০ টি দোকানঘর বন্দোবস্তে সম্পুর্ন প্রভাবশালীদের কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
”যার টাকা আছে তার জন্য সরকারী খাস জায়গায় দোকান ঘর আছে”আর যার টাকা নেই তার ভাগ্যে সরকারী খাস জায়গাও নেই”।এমন নীতিতেই বন্দোবস্ত দেওয়া হয় ফজুমিয়ারহাট বাজারের খাস জমিতে দোকান ঘর বন্দোবস্ত।একজনের দখলে থাকা দোকান আরেকজনকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।এতে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে।
টাকার নিকট হেরে গেলেন গরীব অসহায় ও নিরীহ মানুষ।সঠিক প্রাপ্যরা উপেক্ষিত। সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের খামখেয়ালিপনা আর ঘুষ বাণিজ্যের কারনে প্রাপ্য লোকজন না পেয়ে, পেয়েছে ধনীরা।খাসজমিতে দোকান ভিটি বন্দোবস্ত পাওয়া অনেকেরই ঐ বাজারে একাধিক দোকানঘর রয়েছে।
এখন আবার একই কায়দায় টাকার বিনিময় তারাই পান ঐ খাস জমিতে দোকান ঘর।বার বার একই ব্যক্তি সরকারের খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়া নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।মাঠ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমন সিদ্বান্তে হতবাগ নিরীহ মানুষ। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে সরকারের।
অনেকের নিজের নামে সরকারি খাস জমিতে দোকান ভিটি থাকায় তাদের আত্মীয় স্বজনদের নামে ঐ বাজারের দোকানঘর বন্দোবস্ত নেন।এই যেন এক রামরাজত্ব।কে শুনে কার কথা।টাকা হলেই সব কিছু সম্ভাব চরকাদিরা ইউনিয়ন তহসিল অফিসে। চরকাদিরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস সুত্রে জানাযায়,তৎকালীন তহসিলদার সানাউল্লার সময় ফজুমিয়ারহাট বাজারের ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি নতুন গলি নির্মাণ করার লক্ষ্যে সরকারের ১ নং খাস খতিয়ান ভূক্ত জমিতে দোকান ভিটির জন্য আবেদন করেন ঐ এলাকার প্রভাবশালী ও ধনী ব্যক্তিরা।
এদের প্রত্যেকের নিজের নামে কিংবা আত্মীয় স্বজনদের নামে ফজুমিয়ারহাট বাজারে একাধিক দোকান ঘর থাকার পরেও রাতের আধাঁরে সম্পুর্ন গোপনীয় ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে সরকারি অসাধু কিছু কর্মকর্তা তাদের কে বন্দোবস্ত পাইয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পুর্ণ করেন। বন্দোবস্ত পাওয়া তালিকায় রয়েছে নুরুল ইসলাম ,সারওয়ার, সোহেল বাংগালী, আব্দুশ শহীদ, মিলন মিয়া,আনোয়ার হোসেন হিরন হাওলাদার, শাহজালাল মানিক,আব্দুল মালেক মেম্বার ও ডালিম কুমার শ্রীপদ প্রমুখ।
উপকারভোগী নুরুল ইসলাম ও সারওয়ার জানান এই ভিটি গুলো বন্দোবস্ত নিতে আমাদের প্রত্যেক লোকের প্রায় লক্ষাধিক টাকার মত খরছ হয়েছে।আপনারা লেখালেখি করলে হয়তো বন্দোবস্ত বাতিল হয়ে যাবে।এ বিষয়ে লেখালেখি না করতে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ জানান। লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে এই কাজ সম্পুর্ন করা হয়।
অনেকেই টাকা দিয়েও দোকান ভিটি না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ তৎকালীন তহশিলদার সানা উল্লা ও ফজুমিয়ারহাটের কিছু দালালের খপ্পরে পড়ে এই ভিটির জন্য ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা করে আরো প্রায় ১০ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্ত তাদের নামে কোন দোকান ভিটি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। কিন্ত এই জমির ভিটিগুলো পুর্বে অন্য লোকজনের দখলে রয়েছে।
বর্তমানে ও তারা ভোগদখলে থেকে সরকারকে রাজস্ব দিয়ে যাচ্ছেন।নিয়মানুযায়ী আগের দখলে থাকা ব্যক্তি ঐ জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার অধিকার রাখেন।কিন্তু তাদের কে না জানিয়ে সম্পুর্ন গুপনীয় ভাবে তারা এই দোকান ভিটি গুলো বন্দোবস্ত নেন। উচিত ছিল জনসম্মুখে লটারীর মাধ্যমে দোকান ঘর বন্দোবস্ত দেওয়ার।কিন্ত সরকারের সকল আইন ও বিধিমালা লংঘন করে সম্পুর্ন একতরফা ও গোপনীয় ভাবে এই ভিটি গুলো বন্দোবস্ত দেন কর্মকর্তারা।
এই নিয়ে ফজুমিয়ারহাট বাজার ব্যবসায়ীদের মাঝের চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী ও বাজার ব্যবসায়ী ইসমাইল, স্বপন,আবুল হোসেন ও ইউছুপ জানান উপজেলার ফজুমিয়ারহাট বাজার একটি বাণিজ্যক কেন্দ্র। জায়গার অভাবে এ বাজারে কোন টল ঘর ও পাবলিক টয়লেট করা যাচ্ছে না।অথচ সরকারী এই জমিতে টল ঘর ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করার মত যথেষ্ট জায়গা রয়েছে।তাই জনবহুল এই বাজারের উন্নয়নের স্বার্থে প্রভাবশালীদের নামে দেওয়া জমির বন্দোবস্ত বাতিল করে একটি পাবলিক টয়লেট ও টল ঘর নির্মাণ করার দাবী এলাকাবাসী ও বাজার ব্যবসায়ীদের।
এ ব্যাপারে চরকাদিরা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল আলী বলেন,ঐ জায়গাতে টলঘর ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা যেতে পারে।কিন্তু এখন তো বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভাল বলতে পারবে। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি পুদম পুষ্প চাকমা বলেন আমি নতুন এসেছি।বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি।