
বিডি ২৪ অনলাইন নিউজ: গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইডেন গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও টেন্ডার বাণিজ্য করে আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলেই তিনি এই টাকা তছরুপ করেছেন। বর্তমানে তিনি নিজেকে একপি রাজনৈতিক দলের একজন অর্থ দাতা বলে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদায়ন পাবার জন্য একপি রাজনৈতিক দলের-এর বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনে অর্থ দান করছেন বলেও অভিযোগ আছে। এছাড়া আওয়ামী আমলে সুবিধা নিয়ে এখন নিজেকে একপি রাজনৈতিক দলের-এর একজন কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, মো. রাকিবুল হাসান ইডেন গণপূর্ত বিভাগে কোনো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ করার সুযোগ না দিয়ে নিজেই ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেন। এইভাবে গত তিন বছরে ইডেন গণপূর্ত বিভাগ থেকে রাকিবুল কোটি টাকা নিজের পকেটে ভরেছেন বলে জানা যায়।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে মো. রাকিবুল হাসান তেজগাও গণপূর্ত উপবিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী থাকাকালীন তেজগাঁও শিল্প প্লট বরাদ্দ করা নিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। প্লট বরাদ্দের সময় তিনি যারা আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে পরিচিত তাদেরকেই প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন বলে যানা যায়। এতে করে তিনি কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরো জানা যায়, তেজগাঁও ভূমি ভবন নির্মান প্রকল্পের কাজে কোটি টাকা কমিশন বাণিজ্য করেছেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘দেশ উন্নয়ন’-কে বিশ কোটি টাকার ভুয়া ভেরিয়েশন করে দিয়ে দুই কোটি টাকা কমিশন নিয়েছেন বলেও জানা যায়।
এছাড়া, তেজগাও বিসিক ভবন নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাদারীপুরের এমদাদ ঠিকাদার ভবনের বেজমেন্ট নির্মাণের সময় পাইলিংসহ নানান জালিয়াতি করেছেন। ঠিকভাবে বেজমেন্ট তৈরি না করায় কিছুদিন আগে বেজমেন্ট পানি উঠেছে। জানা যায়, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান উৎকোচ নিয়ে এই ত্রুটিপূর্ন বেজমেন্ট এর ছাড়পত্র দিয়েছিলেন ঠিকাদারকে।
জানা যায়, ‘কুশলী নির্মাতা’ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তেজগাঁও-য়ে কাজ করে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাকিবুলকে ৫ শতাংশ কমিশন দিয়ে সম্পূর্ন বিল তুলে নিয়েছে।
গণপূর্তের একাধিক কর্মকর্তা জানায় যে, মাঠ পর্যায়ে সরকারি দরপত্রের কাজ সঠিকভাবে হয়েছে কিনা, গুণগতমান যাচাই করাসহ বিভিন্ন কাজ সচরাচর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীরাই করে থাকেন। এই সুযোগই কাজে লাগিয়েছেন মো. রাকিবুল হাসান। টাকার বিনিময়েই তিনি এসব জালিয়াতি করা কাজের ছাড়পত্র দিয়েছেন।
আরো অভিযোগ আছে যে, রাকিবুল হাসান তেজগাঁও গণপূর্ত উপবিভাগে শিল্প প্লট ও উন্নয়ন প্রকল্প থেকে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই অবৈধ অর্থ দিয়ে ঢাকায় জমি ক্রয়, ফ্ল্যাট ক্রয়, দশ একর জায়গা ক্রয়, কুমিল্লা শহরে দশ কাঠার একটি জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়াও গাজীপুরে ত্রিশ একর জায়গার উপর তার একটি রিসোর্ট-এর কাজ নির্মানাধীন অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া গণপূর্তে গুঞ্জন রয়েছে যে, দেশের বাহিরে সিঙ্গাপুরে কয়েক শত কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছেন মো. রাকিবুল হাসান।
এবিষয়ে ইডেন গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।