বৃহস্পতিবার ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   বৃহস্পতিবার ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়,ঘাটতি কোথায়?
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ২:২৪ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়,ঘাটতি কোথায়?

বিডি ২৪ অনলাইন নিউজ: ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলে এবার ব্যাপক ধস নেমেছে। এবার গত বছরের চেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে কম। পাসের হারও কমেছে ব্যাপকভাবে। অর্ধেকে নেমেছে জিপিএ-৫ পাওয়ার হার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দাবি ওভারমার্কিং হয়নি এটা একটা বড় কারণ। তবে অন্য কারণও আছে বলে স্বীকার করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়া, অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবসহ সামাজিক অবক্ষয় ফলাফল বিপর্যায়ে বড় প্রভাব ফেলেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, পাবলিক পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণ অনুসন্ধান, ও তা উত্তরণে ভূমিকা না নেওয়া, শিক্ষায় বিনিয়োগ না বাড়ানো এবং শিক্ষকদের বেতন-ভাতাসহ নানা কারণে ফলা বিপর্যয় ঘটছে।তারা বলছেন, মেধার মূল্যায়নে ওভারমার্কিং করা হয়নি, তার চেয়ে বড় কারণ লেখাপড়ায় ঘাটতি।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী  বলেন, ‘ফলাফল একেবারেই অপ্রত্যাশিত না। কিন্তু আমরা হোঁচট খেয়েছি। ক্রমাগত যদি বিপর্যয় হতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে কোথাও না কোথাও গলদ আছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলছি শুধু জিপিএ-৫ পাওয়ার পেছনে দৌড়ানো শিক্ষার পরিচয় নয়। আন্দোলনের পর সব জায়গায় বিশৃঙ্খলা বা অনিশ্চয়তা হতে পারে। আমরা সব জায়গায় দেখেছি। কিন্তু অনিশ্চয়তা যে অরাজকতার দিকে চলে যাবে এটা বুঝতে পারিনি। সেই জায়গাতে গিয়ে পৌঁছেছি। এ জন্য শিক্ষার্থীরা দায়ী না। দায়ী হচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা।’

তিনি বলেন, ‘এখন নিবিড় গবেষণার সময় এসেছে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে সঠিকভাবে মার্কিং করেছেন, এটি একটি কারণ বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু মফস্বলের কলেজগুলোতে শিক্ষক নেই। ইংরেজিতে শিক্ষকরা খারাপ করেছে। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও মর্যাদার জন্য মাঠে নামতে হয়, তাহলে সব কারণগুলো খুঁজে দেখতে হবে। এ জন্য নিবিড় গবেষণা দরকার। ২০২টি কলেজের কেউ পাস করেনি। শিক্ষার্থীদের কী অপরাধ? এদের পেছনে কোথায় ঘটতি কোথায় গলদ সেগুলো দেখতে হবে, কিন্তু সেটা কোথায়। শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয় একাই দায়ী নয়, সংশ্লিষ্ট সবারই দায় আছে। শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, শিক্ষক, অভিভাবক সবাইরই দায় আছে।’

২০২৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন (ফাইল ছবি)২০২৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন (ফাইল ছবি)

এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, ‘শিক্ষক স্বল্পতা, বেতন-ভাতার অভাব, কোচিং বাণিজ্য রয়েছে। যে যত অর্থ খরচ করতে পারবে সে ততো ভালো ফল করবে। আমরা বিনিয়োগ করতে পারছি না। শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। নিবিড় গবেষণা করতে হবে। সংশ্লিষ্টদের মাঠের খবর রাখতে হবে। শুধু যথাযথ মার্কিং করার কারণেই কমেছে সেট নিয়ে বসে থাকলেই হবে না। লাখ লাখ শিক্ষার্থী ফেল করেছে তারা যাবে কোথায়? তাদের দোষ কী। তাদের দায় আমাদের নিতে হবে। দায়িত্বশীলদের দায় নিতে হবে।’

২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সাধারণ নয়টি শিক্ষা বোর্ড- ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ বোর্ড এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০২৪ সালে এ পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

২০২৪ সালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল দেওয়া হয়েছিল সাবজেক্ট ম্যাপিং করে। তাতে ফলাফল ভালো হলেও অটোপাসের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। শিক্ষাঙ্গনের অস্থির পরিবেশের মধ্যেই ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার চেয়ে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ফলাফলে ধস নেমেছে।

এবারের ফলাফল

এবার সর্বমোট পরীক্ষার্থী ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন। উত্তীর্ণ ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন। পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। পরীক্ষায় ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সাড়ে চার লাখ শিক্ষার্থী এইচএসসিতে পরীক্ষাতেই ফেল করেছেন। গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এই সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৪৯ জন।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, উচ্চতর গণিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। ফলে পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমে গেছে।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। এইচএসসিতে পাসের হার ৫৭ দশমিক ১২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৩ হাজার ২১৯ জন। আলিম পরীক্ষায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন চার হাজার ২৬৮ জন। কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৬২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক হাজার ৬১০ জন।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যশোরে ৫০ দশমিক ২০ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, বরিশালে ৬২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সিলেটে ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, দিনাজপুরে ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং কারিগরিতে পাসের হার ৬২ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ভিকারুননিসা নূর স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ (ফাইল ছবি)এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ভিকারুননিসা নূর স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ (ফাইল ছবি)

ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৬ হাজার ৬৩ জন, রাজশাহীতে ১০ হাজার ১৩৭ জন, কুমিল্লায় ২ হাজার ৭০৭ জন, যশোরে ৫ হাজার ৯৯৫ জন, চট্টগ্রামে ৬ হাজার ৯৭ জন, বরিশালে এক হাজার ৬৭৪ জন, সিলেটে এক হাজার ৬০২ জন, দিনাজপুরে ৬ হাজার ২৬০ জন, ময়মনসিংহে দুই হাজার ৬৮৪ জন, মাদ্রাসা বোর্ডে চার হাজার ২৬৮ জন এবং কারিগরিতে এক হাজার ৬১০ জনসহ মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন।

জিপিএ-৫ অর্ধেকে নেমেছে

২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় সাড়ে ৭৬ হাজার কমেছে; যা গতবারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন পরীক্ষার্থী।

২০২৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। এবার পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩২ হাজার ৫৩ জন এবং ছাত্রী পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৪ জন। গত বছরের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ কমেছে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন।

কেউ পাস করেনি বেড়ে ২০২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে

২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ২০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। ২০২৪ সালে এইচএসসিতে শতভাগ ফেল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৬৫টি। এবার তা বেড়ে হয়েছে ২০২টি।

ভেন্যু-কেন্দ্র বাতিলে ফল বিপর্যয় কুমিল্লায়

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শামসুল আলম বলেছেন, ‘আমাদের ১৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬২টি ভেন্যু কেন্দ্র। সেই ভেন্যু কেন্দ্রগুলো তুলে দিয়েছি। কোনও পরীক্ষার্থী নিজ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দিতে পারেনি। ফলাফলে এর একটা প্রভাব পড়েছে।

চেয়ারম্যান বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা হয়েছে। উত্তরপত্র মূল্যায়নে জন্য শিক্ষকদের বলেছি, যে নম্বর প্রাপ্য সেই নম্বর দেবেন। কম বা বেশি যেন না পায়। এসব প্রভাব পড়েছে।’ ইংরেজি পাসের হার কম বলে জানান চেয়ারম্যান।

ইংরেজিতে ফল খারাপ

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এ বছরের বিষয়ভিত্তিক ফলাফলে দেখা গেছে, ইংরেজিতে গড়ে কম নম্বর পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ইংরেজিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা গড় নম্বর ৭৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ, রাজশাহী ৬৮ দশমিক ৮২ শতাংশ, কুমিল্লা ৬৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, যশোর ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ, চট্টগ্রাম ৬৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ, বরিশাল ৭৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, সিলেট ৬৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ, দিনাজপুর ৬৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন।

এইচএসসিতে ফল ‘বিপর্যয়’, ঘাটতি কোথায়?

ফলাফলের এ চিত্রে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে খারাপ করেছে যশোর শিক্ষা বোর্ড আর ভালো করেছে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। যশোর শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে গড় নম্বর পেয়েছেন ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর বরিশাল সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে ৭৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।

বিষয়ভিত্তিক বাংলা পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা গড় নম্বর পেয়েছে ৯৪ দশমিক ২৭ শতাংশ, রাজশাহী ৯৪ দশমিক ৩১ শতাংশ, কুমিল্লা ৯২ দশমিক ২৮ শতাংশ, যশোর ৯০ দশমিক ৯১ শতাংশ, চট্টগ্রাম ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, বরিশাল ৮৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, সিলেট ৯০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, দিনাজপুর ৯২ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ ৮৮ দশমিক ৩১ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন।

ফলাফলের এই চিত্রে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে কম নম্বর পেয়েছে বরিশাল ৮৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ আর সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড ৯৪ দশমিক ৩১ শতাংশ।

এছাড়া আইসিটিতে গড়ে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে যশোর ৮৮ দশমিক ৬৩ এবং সবচেয়ে কম নম্বর পেয়েছে ময়মনসিংহ ৭২ দশমিক ৮২ শতাংশ।

পদার্থবিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ৯১ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম নম্বর পেয়েছে কুমিল্লা ৮১ দশমিক ৫০ শতাংশ।

যুক্তিবিদ্যায় গড় নম্বরে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে রাজশাহী ৯৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম পেয়েছে চট্টগ্রাম ৭৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।

অ্যাকাউন্টিংয়ে গড় নম্বরে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ৮২ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম পেয়েছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ৫৮ দশমিক ৪১ শতাংশ।

‘ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততাকে বেছে নিয়েছি’

‘এসএসসি ফলাফল প্রকাশের পর মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে যে উদ্বেগ উঠেছিল, আমি তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছি। আমি সকল শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছি—যেন ভবিষ্যৎ পরীক্ষায়, বিশেষ করে এইচএসসি মূল্যায়নে, সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতি সর্বোচ্চ ন্যায্যতা বজায় রাখা হয়, কিন্তু একই সঙ্গে যেন ফলাফলের বাস্তবতা বিকৃত না হয়। আমরা অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি নয়, বরং ‘ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততাকে বেছে নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত সহজ নয়, কিন্তু প্রয়োজনীয়। কারণ আজ যদি আমরা সাহস করে বাস্তবতা স্বীকার না করি তাহলে মেধাবীদের প্রতি এবং আগামী প্রজন্মের প্রতি আমরা অন্যায় করব।’

দায়িত্ব ও আত্মসমালোচনা করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় হিসেবে আমরা কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারি না। এবং এই মন্ত্রণালয়ের কর্ণধার হিসেবে আমার প্রথম দায়িত্ব হলো নিজেকে এবং আমাদের পুরো ব্যবস্থাকে মূল্যায়নের আওতায় আনা। এই ফলাফলকে আমি ব্যর্থতা নয়, বরং আত্মসমালোচনার সুযোগ হিসেবে দেখছি। আমরা এখন এমন এক সময়ে আছি, যেখানে নিজেদের, শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্রে শেখার ভবিষ্যৎ নিয়ে সততার সঙ্গে কথা বলার সময় এসেছে।’

উত্তরণের উপায় প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তিনটি নীতিতে এগোতে চাই, বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নয়, বাস্তবতাকে বুঝে এগোনো। দোষারোপ নয়, সমাধান খোঁজা। সংখ্যা নয়, শেখার মানকে সাফল্যের মাপকাঠি করা। এই ফলাফল আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। এটি হয়তো কষ্টের, কিন্তু এটি সত্যের দিকে ফেরার সূচনা। আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি। আমরা শুনছি। আমরা শিখছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই—একটি সৎ, জবাবদিহিমূলক, এবং শেখাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা গঠন করা, যেখানে প্রতিটি ফলাফলই হবে বাস্তব শেখার প্রতিফলন।’

ফল খাপারে কারণ অনুসন্ধানের কথাও বলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার ধারাবাহিকতায় এবারও খারাপ করেছে, সেখানে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। তবে আমাদের থেকে যারা এ বিষয়ের সঙ্গে জড়িত তারা বললে ভালো হয়। ভালো স্কুলগুলো কেন রেজাল্ট খারাপ করেছে বা ভালো করেছে, খারাপ স্কুলগুলো থেকে যেগুলো পাস একেবারেই করেনি তাদের থেকেও প্রতিনিধি নিয়ে আসবো। যারা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন অভিভাবকদেরও আমরা নিয়ে আসবো। তাদের সঙ্গে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নের উত্তর আমরা কয়েকদিন পরেই বিশদভাবে দিতে পারবো।’

শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ফল খারাপের কারণ

শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশকেও দায়ী করেছেন খারাপ ফলাফলের জন্য। তিনি বলেন, সামনের সপ্তাহে একটা পর্যালোচনা করা কারণ খোঁজা হবে। একটা বিষয় ভাবছি। শূন্য পাস এবার ২০২টি, গতবার ছিল ৬৫ । শূন্যের কাছাকাছি আরও আছে। যদি এই বছরের কথা বলি আমরা সবাই জানি, শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ খুব বেশি শিক্ষামুখী ছিল না। এটা আমরা সবাই অনুভব করি। হতে পারে সেটারও প্রভাব থাকতে পারে , অন্যান্য কারণও রয়েছে। আমরা ধারণা করে পরিকল্পনা করতে চাই না। সার্ভে করে আসল কারণ চিহ্নিত করি এবং তার ভিত্তিতে পরিকল্পনা করি যাতে আউটকামটা ভালো পেতে পারি।’




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669 / 01712596354

 

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।

© বিডি ২৪ নিউজ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংঘাতের মাঝে থাকা ডুরান্ড লাইন,দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে বিতর্ক   বিতর্কিত প্রকৌশলী ইকবাল কবিরের দুর্নীতি অনুসন্ধান করবে দুদক   কালচারাল অফিসার অসিত বরন পালিয়ে গেল গভীর রাতে   বরিশালের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুল’র সঙ্গে বন্ধু ফুলকাম বাদশার স্ত্রীর পরকীয়ার অভিযোগ   মা ইলিশ বাঁচাতে জলকামান ব‌্যবহার   সুনামগঞ্জের ছাতকে সোনাই নদীর বালু লুটে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট   বরগুনার তালতলীতে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ সাবেক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে   পালিয়ে যেতে পারে বরিশাল শিল্পকলার অসিত বরন দাশ   আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের   জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে:সিইসি   বরিশাল শিল্পকলার সেই বিতর্কিত অসিতকে এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বদলি   কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড: ইংরেজি ও উচ্চতর গণিতে ভরাডুবি   বাউফলে শিক্ষক আন্দোলনের নেতৃত্বে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা   টেইলার্সের কারখানা থেকে শ্রমিকের লাশ উদ্ধার   পটুয়াখালীতে র‍্যাবের গাড়ি ও বাসের সংঘর্ষে নিহত তিন   বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কের হাজিপুর সেতুতে নির্ধারিত টোলের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়   মেহেন্দীগঞ্জে জেলেদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ,নিখোঁজ জেলের লাশ উদ্ধার   বরিশাল বিভাগ প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর পর বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্তে আনন্দে নগরবাসী   বরিশালের ৬টি আসনে হেভিওয়েটের ছড়াছড়ি, থাকছে বিদ্রোহীর শঙ্কা   বরগুনায় সমাজসেবা উপপরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
Translate »