|
স্ত্রী-সন্তানদের নামে সম্পদের পাহাড়
দুদকের ৪মামলা,পিআইও আবুল কালাম আজাদ এখনো বহাল তবিয়তে
|
|
![]() বিডি ২৪ নিউজ অনলাইন: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ৭ মাসের ব্যবধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ৪টি মামলা হলেও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল কালাম আজাদ এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। মামলাগুলোতে স্ত্রী, সন্তান ও শ্যালককে আসামি করা হলেও তারাও আছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ অবস্থায় তিনি অনিয়মিত অফিস করলেও প্রশাসন পিআইওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত পিআইও আবুল কালাম আজাদ পাবনার সুজানগর উপজেলার হাসামপুর গ্রামের শমসের আলী মিয়ার ছেলে। তার শ্যালক জামাল উদ্দিন ফকির একই উপজেলার হাকিমপুর নতুনপাড়ার আফতাব উদ্দিন ফকিরের ছেলে। দুদকের বক্তব্য ও মামলার বিবরণ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়ায় ২৩ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় পিআইও আবুল কালাম আজাদ ও তার শ্যালক জামাল উদ্দিন ফকিরকে আসামি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর পিআইওর বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করে দুদক। এরপর একই বছরের ৮ ডিসেম্বর তিনি ৩২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর ও ১ কোটি ৩৩ লাখ ১১ হাজার ১৮২ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রদান করেন। এতে প্রতীয়মান হয় যে, কমিশনে পিআইওর দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ২৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শ্যালকের নামে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানকালে তার শ্যালক জামাল উদ্দিন ফকিরের নামে দুদক মোট ১ কোটি ৯১ লাখ ৮৬ হাজার ১৮২ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য পায়। একই সময়ে তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ২৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ১৯ লাখ ৮১ হাজার ১৮২ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ১০ লাখ ৭ হাজার টাকা। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি অসাধু উপায়ে ১ কোটি ৯ লাখ ৭৪ হাজার ১৮২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এছাড়াও, আসামি আবুল কালাম আজাদ অবৈধ আয় দ্বারা তার শ্যালক জামাল উদ্দিন ফকিরের নামে ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় একটি গাড়ি ও ৯৬ লাখ টাকার একটি জিপ গাড়ি ক্রয়ে সহযোগিতা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে দণ্ডবিধি’র ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আগের তিন মামলা আবুল কালাম আজাদ: ১ কোটি ৩২ লাখ ৪৬ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন। স্ত্রী মর্জিনা খাতুন: ১ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৪৮৩ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন। ছেলে ফজলে রাব্বি রিয়ন: ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯৪১ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখেছেন। যা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অভিযুক্ত ও প্রশাসনের বক্তব্য শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: কামরুজ্জামান বলেন, পিআইও আমার অধীনস্থ কর্মকর্তা না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না। আপনি জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি অনিয়মিত অফিস করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ বলেন, দুদকে মামলা হলেও বিষয়টি পিআইওর ব্যক্তিগত। মামলায় চার্জশিটভুক্ত হলে তখন আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব। এর আগে আমাদের কিছু করার নেই। অনিয়মিত অফিস করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। |