বরগুনায় সমাজসেবা উপপরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
প্রকাশ: ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ৩:৪৭ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
বিডি ২৪ নিউজ রিপোর্ট: বরগুনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন খাতের সরকারি অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, অফিসের বিভিন্ন প্রকল্প, ক্রয় ও চুক্তিভিত্তিক খাতে অনিয়মের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
সূত্র জানায়, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের জন্য বই ও সাময়িকী, তথ্য ও প্রযুক্তি সরঞ্জাম, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক উপকরণ কেনার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বিল দেখিয়ে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সহিদুল ইসলাম। এছাড়া অফিস ভাড়া চুক্তিতে প্রকৃত পরিমাণের চেয়ে বেশি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি শিশু পরিবারে এতিম নিবাসী সংখ্যা বেশি দেখিয়ে প্রতি মাসে ঠিকাদারদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন তিনি। এমনকি সরকারি অফিসের ভেতরে একটি রুমে তিনি নিজে অবস্থান করেন, যেখানে প্রায়ই জামা ছাড়া অবস্থায় অফিসে প্রবেশ করেন বলে জানা গেছে। এতে নারী কর্মীরা বিব্রত অবস্থায় পড়েন এবং অফিসের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি মাসের একটি বড় অংশ বরিশালে নিজের বাড়িতে অবস্থান করেন, ফলে অফিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া জটিল রোগীদের ভাতা অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপপরিচালক সহিদুল ইসলাম বলেন,
“আমি বরগুনায় আসার পর থেকেই অফিসে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। আগে অনেকেই কাজে ফাঁকি দিতেন, আমি কঠোর হওয়ার পর তারাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগ করছে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আমি নিজেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
অন্যদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সমাজসেবা কর্মীরা জানান, বরগুনা জেলায় সমাজসেবা বিভাগের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ইতিমধ্যে বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে কেন্দ্রীয় দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও যথাযথ তদন্তের অভাবে অনেকেই এখনো বহাল তবিয়তে আছেন।
এ বিষয়গুলো জানার জন্য সহিদুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিকের সাথে দূর্ব্যবহার করে এবং উক্ত প্রতিবেদককে মানহানির মামলা করবে বলেও জানায়।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্তৃপক্ষ বলছে, “দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত থাকবে। কোনো কর্মকর্তাই অনিয়ম করে পার পাবে না।