শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে নিয়ম ভেঙে পদোন্নতি, প্রকৌশলীদের তীব্র ক্ষোভ
প্রকাশ: ১ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
অনলাইননিউজ: শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি) নিয়ম ভেঙে পদোন্নতি দেওয়ায় সংস্থাটির প্রকৌশলীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পদোন্নতির ক্ষেত্রে শর্ত লঙ্ঘন ছাড়াও আর্থিক লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিকভাবে সুবিধাভোগীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রকৌশলীরা শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মো. জরজিসুর রহমানকে নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) পদে চলতি দায়িত্বে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে গত ২০ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আলতাফ হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি হয়। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চলতি দায়িত্ব-সংক্রান্ত বিধিমালা-২০২৩ এবং ইইডির নিয়োগবিধি উপেক্ষা করেই এ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
নিয়োগবিধি অনুযায়ী, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) হিসেবে অন্তত সাত বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। কিন্তু জরজিসুর রহমানের সেই যোগ্যতা ছিল না। তিনি ১৯৯৬ সালে উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) হিসেবে ইইডিতে যোগ দিয়ে পরে সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে পদোন্নতি নেন। কিন্তু সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) পদে চাকরি না করলেও তাঁকে নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) পদে উন্নীত করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এ প্রক্রিয়ায় প্রায় ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
ইইডির ভেতরে আলোচনা চলছে, জরজিসুর রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী মন্ত্রীদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে অনুমোদিত বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশল পরিষদ ইইডি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ওই পরিষদের আরও কয়েকজন নেতাও পদোন্নতির ক্ষেত্রে সুবিধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে পরিষদের প্রচার সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান তালুকদার নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে চলতি দায়িত্বে পদোন্নতি পেয়েছেন। একই কমিটির অর্থ সম্পাদক মো. গোলাম সাকলাইনও পদোন্নতির জন্য তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জরজিসুর রহমান বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন, তারা কেন দিয়েছেন জানি না।’ বিদ্যুৎ শাখায় কাজ করে কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই কীভাবে যান্ত্রিক শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী হলেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শাখাটির নাম ইএম (ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ম্যাকানিক্যাল)। আমি ছয় বছর বিদ্যুতে সহকারী প্রকৌশলী ছিলাম। আমার আগে-পরে আর কেউ ছিল না। কাজে সন্তুষ্ট হয়ে প্রধান প্রকৌশলী আমাকে চলতি দায়িত্বে পদোন্নতির প্রস্তাব দেন, আর মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করে।
যোগাযোগ করা হলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আলতাফ হোসেন বিষয়বস্তু শুনে বলেন, ‘সামনে মেহমান, একটু পরে কথা বলি।’ এর পর কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।