July 27, 2024, 4:15 am
শিরোনাম:
মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে বিজয়ী মনোহরদীর সন্তান এ্যাড.কাজী হুমায়ুন কবীর মনোহরদীতে ব্রক্ষ্মপুত্র নদীতে অভিযান ১০টি ম্যাজিক জাল জব্দ

শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের দাবি রাবি ছাত্রদলের

Reporter Name
  • আপডেটের সময় : বুধবার, জুন ১৭, ২০২০
  • 627 দেখুন

রায়হান ইসলাম রাবি প্রতিনিধিঃ

করোনা মহামারী যেন জনজীবনে এক অভিশাপ হয়ে পরেছে। দিনের পর দিন মানুষকে দেখিয়ে যাচ্ছে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। ঘাতক এ ভাইরাস একদিকে পঙ্গু করছে দেশের অর্থনীতিকে। অন্যদিকে চলমান লকডাউনে অসহায়দের দিন কাটছে অনাহারে, অর্ধাহারে। এর ছোবল থেকে পরিত্রাণ পায়নি অনেক শিক্ষার্থীর পরিবারও।

একদিকে করোনার ছোবল, এরই মাঝে মেস ভাড়া নিয়ে সমস্যা যেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পড়ুয়া অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জীবনকে আরো বিষীয়ে তুলেছে। চলমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত শিক্ষার্থীরা মেস ভাড়া কমানোর জন্য বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়ে আসছিল।

শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় এনে ‘রাজশাহী মেস মালিক সমিতি’ গত ১০ মে জেলা প্রশাসক হামিদুল হক সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মেস ভাড়া ৪০% কমানোর কথা জানালেও পরবর্তীতে গত ১৭ মে ‘রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতি’ নামে আত্মপ্রকাশ করা এক সংগঠন গত ২৮ মে উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা পুরো ১০০% ভাড়া আদায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যেখানে পরিবারই আজ আয় রোজগারহীন এক দুর্বিষহ সময় অতিবাহিত করছে। সেখানে সম্পুর্ণ মেস ভাড়া কেমনে পরিশোধ হবে? বর্তমান চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলসহ বাম সংগঠনগুলো বিভিন্নভাবে মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়ে আসছে।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাহি বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা মেস ভাড়া নিয়ে শুধু দুশ্চিন্তায় নেই বরং বিপদের মধ্যে রয়েছে। রাবির অধিকাংশ শিক্ষার্থী উত্তর জনপদের মঙ্গাপীড়িত জনগোষ্ঠী। অধিকাংশ শিক্ষার্থী কৃষক, শ্রমিক পরিবারের সন্তান।

সুলতান আহমেদ রাহি

অনেকে টিউশনির টাকা দিয়ে নিজে চলে এবং পরিবারের জন্য ও স্বল্প পরিসরে টাকা পাঠান। এমনকি আমরা রাবি শিক্ষার্থীদের অটো রিকশা চালিয়েও লেখাপড়ার খরচ চালানোর কথাও শুনতে পাই। এই করোনা মহামারীতে তাদের আয় বন্ধ হওয়ায় অনেকেই মেস ভাড়া পরিশোধ করতে না পেরে বিপদের মধ্যে পড়েছেন। আমরা কখনো এহেন অনৈতিক ছাত্রবিরোধী সিদ্ধান্তে সমর্থন দিতে পারি না।

আমরা রাবি শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। যেখানে আমরা সুস্পষ্টভাবে শতভাগ মেস ভাড়া মওকুফের কথা জানিয়েছি। আমরা আরো বলেছি, মেস মালিকদের আর্থিক ক্ষতির দিকটিও যাতে সরকার বিবেচনা করে। রাহি বলেন, বর্তমান সরকার যদি ছাত্রবান্ধব সরকার হতো তবে সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য মেস মালিকদের আর্থিক প্রণোদনা কিংবা ভর্তুকি দিতে পারতো।

আমরা করোনা মোকাবিলায় এই স্বৈরাচারী সরকারকে শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা কিংবা প্রণোদনা দিতে দেখলাম না, যা অন্তত দুঃখজনক। আমি মনে করি মেস ভাড়া নূন্যতম ৬০ ভাগ মওকুফ করা প্রয়োজন এবং যাদের আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের ১০০ ভাগ মওকুফ করা প্রয়োজন।তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মেস মালিকদের অধিকাংশ তাদের ভাড়া মওকুফ করে দেওয়ার মত ইচ্ছা টুকু দেখছি না।

তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট কিছুদিন আগে এক স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা ইউনিট চালু ও অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছিলাম। তাছাড়া সকলের কিন্তু আর্থিক সমস্যা নেই। যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সহায়তার জোর দাবি জানাচ্ছি।

তাছাড়া কেউ যদি মনে করেন কারও মেস নিয়ে সমস্যা হচ্ছে আপনারা মেস ছেড়ে দিয়ে আমার বাসায় উঠুন। আমি সাদরে আপনাকে গ্রহণ করবো। আমার বাসায় ৫ জনের থাকার ব্যবস্থা আমি করতে পারব। এভাবে আমি রাজশাহীর স্থানীয় শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি আপনার বন্ধু, ছোট ভাই কিংবা বড় ভাইকে এই মহামারীতে আশ্রয় প্রদান করুন।

তিনি আরো বলেন, সর্বোপরি এই সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। হত দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। মেস মালিকদের সাথে বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রয়োজনে ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। হল অথবা একাডেমিক ভবণগুলোতে আপাতত ক্লাস বন্ধ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের মালামাল এনে তুলতে হবে। পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে হবে।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ মামুন বলেন, এই সময় মেস ভাড়াটা অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারন। কেননা করোনা দুর্যোগের চরম প্রভাব আজ দেশের অর্থনীতিতে পরেছে।যা ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে সন্তান।আর্থ উপার্জনের সুযোগ সীমিত হওয়ায় বর্তমানে তাদের পারিবারিক অসচ্ছলতা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

রাজু আহমেদ মামুন

এই মুহূর্তে মেস ভাড়া তাদের জন্য বাড়তি সমস্যা সৃষ্টি করবে। সুতরাং এই সিদ্ধান্তকে আমরা সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক বলে মনে করি। একই সাথে এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মেস মালিক সমিতির নতুন সিদ্ধান্ত কোন ভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।

কারন জেলা প্রশাসক কতৃক ৪০% মেস ভাড়া মওকুফের পরেও কিভাবে তারা আবার নতুন সিদ্ধান্ত নেই ? সম্পূর্ণ মেস ভাড়া পরিশোধের সিদ্ধান্ত অনেকটাই অমানবিক বলে আমরা মনে করি।

সুতরাং উক্ত সিদ্ধান্ত পুনঃর্বিবেচনা করার জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সাধারন শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলা এবং তাদের বিপদের সঙ্গী হওয়া অমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সুতরাং দুই পক্ষেরই পরিস্থিতি বিবেচনায় ৮০% মেস ভাড়া মওকুফ করা উচিত বলে মনে করি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারন শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক আন্দোলনে অতীতে সংক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। এ-ই ক্রান্তিলগ্নেও তাদের পাশে থেকে দাবি আদায়ে সক্রিয় ভুমিকা রাখবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102