নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সালমা সুলতানা এবং তার স্বামী আবুল কালাম আজাদ ফারুকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা। এ ঘটনায় ভূক্তভোগীদের বক্তব্যসহ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ভাইরাল হয়েছে।
এ ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তাদের টাকা ফেরতসহ ইউপি সদস্য এবং তার স্বামীর বিচার দাবি করেছেন ভূক্তভোগীরা। উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে খিদিরপুর ইউনিয়নে ২৭৯ জন প্রতিবন্ধীকে সরকার প্রদত্ত প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর আওতায় আনা হয়।
সে অনুপাতে ১৭জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নাম তালিকাভূক্ত করেছেন সালমা সুলতানা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জুলাই সোনালী ব্যাংকের রামপুর শাখা থেকে নতুন ভাতাভোগী প্রত্যেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নয় হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়।
ভূক্তভোগী মনোয়ারা, দেলোয়ারা, পাপিয়া, নাছিমা আক্তার, নার্গিস আক্তার এবং আব্দুল মালেক জানান, ভাতার এসব টাকা উত্তোলন করে ফেরার পথে ইউপি সদস্য সালমা বেগম এবং তার স্বামী ফারুক প্রত্যেক প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর কাছ থেকে জোরপূর্বক পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নেয়।
স্থানীয়রা জানান, মহিলা সদস্য সালমা সুলতানা এবং তার স্বামী আবুল কালাম আজাদ ফারুক দীর্ঘদিন ধরে তার এলাকায় অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এলাকার নিরীহ প্রতিবন্ধী, বিধবা এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের ভাতার কার্ড করে দেওয়ার নামে প্রতিজনের কাছ থেকে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
পীরপুর গ্রামের ভাতাভোগী নাছিমা আক্তার বলেন, ‘রামপুর সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বাড়ী ফেরার পথে মেম্বারনী সালমা এবং তার স্বামী ফারুক আমার কাছ থেকে জোর করে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধরের হুমকী দেওয়া হয়। আমি তাদের বিচার চাই।
প্রতিবন্ধী আব্দুল মালেক বলেন, ব্যাংক থেকে নয় হাজার টাকা উত্তোলন করার পর ভয় দেখিয়ে মহিলা মেম্বার সালমা এবং তার স্বামী ফারুক আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে গালাগালি করে এবং হুমকী ধমকি দেয়।
স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ইউপি সদস্য সালমা এবং তার স্বামী ফারুকের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীরা তাদের ভাতার টাকা কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমি ফারুককে এসব টাকা ফেরত দিতে বলেছি। ইতোমধ্যে কয়েকজনের টাকা ফেরতও দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালমা সুলতানা বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জামিল বলেন, এমন কোন বিষয় আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি।
মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভূক্তভোগী কেউ আমার কাছে আসলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিব।