বরের লোকজন ও আমন্ত্রিতদের খাওয়া-দাওয়া করিয়ে কাজী প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিয়ে পড়ানোর। এ সময় হাজির হন ইউএনও এরশাদ উদ্দিন। তাঁকে দেখেই ভোঁ দৌড় বর ও তাঁর লোকজনেরা। এক পর্যায়ে ধরা পড়েন কনের বাবা।
পুলিশ তাঁকে আটক করে উপজেলা সদরে আনার পর পূর্ণ বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না মর্মে মুচলেকা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে ধার্যকৃত ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে শেষ রক্ষা পান।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে এ ধরনের ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের নান্দাইলের জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাঙ্গারা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই এলাকার ভ্যানচালক জামাল উদ্দিনের মেয়ে খাদিজা আক্তার। স্থানীয় একটি মাদরাসায় নবম শ্রেনিতে পড়ে।
এ অবস্থায় তার সঙ্গে বিয়ের দিন তারিখ ধার্য হয় পাশের হাড়িয়াকান্দি গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলামের (২২) সঙ্গে। শুক্রবার ছিল বিয়ের দিন। যথারীতি সকাল থেকেই বিয়ের আয়োজন চলছিল।
এ সময় এলাকার এক ব্যক্তির ফোন পান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ফোন করে জানানো হয় কনে রাজী না থাকলেও ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পরিবারের লোকজন।
পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে কনের বাবাকে জানিয়ে দেওয়া হয় এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করার জন্য। কিন্তু বিয়ে বন্ধ না করে সকল কার্যক্রম চালিয়ে যায়।
এ অবস্থায় তিনি একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ের আয়োজনের সত্যতা পান। এক পর্যায়ে বরের সন্ধান করলে দেখা যায় বর ও তার লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যেতে। এ সময় কনের জন্ম নিবন্ধন দেখতে চাইলে যাচাইকালে দেখা যায় কনে নবম শ্রেনিতে পড়লেও ভুয়া জন্ম নিবন্ধনে তার বয়স ১৯ বছরের ওপরে।
জন্ম নিবন্ধনে নেই স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাক্ষর। এ সব ঘটনা স্বীকার করলে কনের বাবাকে আটক করে উপজেলা সদরে এনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্যাট এরশাদ উদ্দিন বলেন, কোনোভাবেই বাল্যবিয়ে বরদাস্ত করা হবে না। কঠোর হাতে দমন করা হবে। এতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।