কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার লাগানোর সময় কয়েকজন কর্মচারীর গাফিলতিতে দুই হাত ও এক পা হারানো আসিক আহম্মেদের দায়িত্ব নিতে এবং কর্মসংস্থানের দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও স্বজনরা।
সোমবার ৩১ আগস্ট সকাল সাড়ে এগারোর দিকে নাগেশ্বরী-কুড়িগ্রাম সড়কের চন্ডিপুরে এ মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এখানে বক্তব্য রাখেন মহিবুল হক খোকন, আসিকের বাবা রফিকুল ইসলাম, শাহানুর হক বাবু, আক্কাস আলী, ফজলুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের বামনপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে আসিক আহম্মেদ (২১) ২০১৫ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর মজুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করেন কুড়ি-লাল পবিস’র নাগেশ্বরী জোনাল অফিসে। তার এই সামান্য আয়ে চলতো গরিব সংসার।
পরে গত বছরের ২৬ নভেম্বর কাজের জন্য অফিসে গিয়ে সার্ভিস অর্ডারভুক্ত হয়ে নেওয়াশী ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন সরকারের বাড়িতে সেচের নতুন সংযোগের মিটার ও ট্রান্সফর্মার উত্তোলন করতে বিদ্যুতের খুঁটিতে ওঠেন।
কাজ শুরুর আগে বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করতে অফিসের লাইন টেকনিশিয়ান তোজাম্মেল হককে জানালে তিনি লাইন বন্ধ করেন। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই আসিকের কাছে ক্লিয়ারেন্স না নিয়ে হুট করেই লাইন চালু করেন। এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তৎক্ষনাত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে রংপুর মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা বার্ন ইউনিটে নিয়ে আড়াই মাস চিকিৎসার পর তার ২ হাত ও এক পা কেটে ফেলতে হয়। এতে ব্যয় হয় প্রায় ৬ লাখ টাকা। সহায় সম্বলহীন হয় দরিদ্র পরিবার। দুর্ঘটনার পর আসিকের পরিবার আইনি সহায়তা নিতে গেলে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের আশ্বাসপ্রদানসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আইনী পদক্ষেপ নিতেও বাধা প্রদান করা হয়।
এখন এ দায় এড়িয়ে চলছেন অভিযুক্ত নাগেশ্বরী জোনাল অফিসের ডিজিএম আতিকুর রহমান, গ্রাহক নেওয়াশী ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, জুনিয়র ইঞ্জিনয়ার ওয়াজেদুল ইসলাম ওয়াজেদ, লাইন টেকনিশিয়ান তোজাম্মেল হোসেন, লাইনম্যান আশিকুর রহমানসহ অন্যান্যরা। পল্লী বিদুৎ কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন তারা।