July 27, 2024, 2:26 am
শিরোনাম:
মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে বিজয়ী মনোহরদীর সন্তান এ্যাড.কাজী হুমায়ুন কবীর মনোহরদীতে ব্রক্ষ্মপুত্র নদীতে অভিযান ১০টি ম্যাজিক জাল জব্দ

এক ভাতিজিকে দাফন ও আরেক ভাতিজিকে দেখতে গিয়ে সড়ক দূর্ঘটনায় লাশ হলেন মেজর সুরাইয়া!

রাহাদ সুমন, বানাড়ীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২০
  • 503 দেখুন

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে উজিরপুর উপজেলার ‍আটিপাড়া ‍এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স-কাভার্ডভ্যান ও যাত্রীবাহী বাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৬ যাত্রী নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ওই ঘটনায় নিহতদের একজন সেনা কর্মকর্তা মেজর সুরাইয়া আক্তার।

ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আর্মড ফোর্সেস নার্সেস সার্ভিসের মেজর ও অ্যাম্বুলেন্সে বহনকারী মৃত নবজাতকের ফুপু ছিলেন তিনি। তার ভাই আরিফের তিন দিন বয়সী কন্যাসন্তান মারা যাওয়ায় তাকে দাফন করতে এবং অপর ভাই তারেক হোসেন কাইউমের ২১ দিন বয়সী কন্যাসন্তানকে দেখতে ছুটি নিয়ে ওই অ্যাম্বুলেন্সে মা-ভাইদের সঙ্গে ঝালকাঠির গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি।

‍বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহত মেজর সুরাইয়া আক্তারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে মরদেহটি ঝালকাঠির বাউকাঠির গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে গার্ড অব অনার প্রদানের পর পরিবারের বাকি মৃত সদস্যদের সঙ্গে জানাজা শেষে তাকেও দাফন করা হয়। একদিনে একই পরিবারের ৫ সদস্যকে দাফনের ঘটনায় শোকাতুর হয়ে ওঠে পুরো বাউকাঠি।

আরো পড়ুনঃ উজিরপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৫ জনের দাফন সম্পন্ন।

নিহত মেজর সুরাইয়া আক্তার ওরফে শিউলি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) কর্মরত ছিলেন।  দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিক তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকারী দল প্রথমে তাকে শিশুটির মা বলে ধারণা করে। গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে জানা যায় তিনি শিশুটির ফুপু। তবে তখনও তার পেশাগত পরিচয় পাওয়া যায়নি। গভীর রাতে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে বরিশাল পুলিশ প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে।

নিহত মেজর সুরাইয়া আক্তার শিউলীর স্বামী আব্দুল কাইউম হোসেন ঢাকার স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির হিসাবরক্ষণ বিভাগে কর্মরত। তাদের সংসারে তিন বছরের শিশু সন্তান রয়েছে।

মেজর সুরাইয়ার স্বামী আব্দুল কাইউম জানান, দুর্ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম

সন্তান হারানো শোকাতুর আরিফের স্ত্রী তামান্নাও শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। কিন্তু এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভাবিকে নিয়ে আমিও বরিশালে চলে আসি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, এমন একটা দুর্ঘটনায় ওই পরিবারে শুধু দুই ভাইয়ের স্ত্রী আর ২১ দিনের শিশুকন্যা উম্মে ফাতেমা বেঁচে রইলো। আমার তিন বছরের সন্তান হারালো মা, নানি, দুই মামাকে। আমি হারালাম স্ত্রীকে। এই শোক আমরা কীভাবে ভুলবো?

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গত ২০ আগস্ট উম্মে ফাতেমা জন্মগ্রহণ করে। তাকে দেখতে এবং নবজাতক ভাতিজির দাফন সম্পন্ন করতেই ওই অ্যাম্বুলেন্সে মা-ভাইদের সঙ্গে বাড়ি যাচ্ছিলেন সুরাইয়া।

আব্দুল কাইউম জানান, নিহত আরিফ হোসেন রাড়ি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসের কর্মকর্তা ছিলেন। গত ৫ আগস্ট ওই গার্মেন্ট কারখানায় যোগ দেন কাইউম। তাদের সঙ্গে নিহত নজরুল আরিফ হোসেনের শ্যালক।

প্রসঙ্গত, ৬ সেপ্টেম্বর আরিফের স্ত্রী তামান্না আক্তার ঢাকার উত্তরার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যা সন্তান জন্ম দেন। বিয়ের ১০ বছর পরে জন্ম নেওয়া নবজাতক অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে শিশুটি মারা যায়। বুধবার তামান্নাকে চিকিৎসায় রেখে নবজাতকের মরদেহ ঝালকাঠির বাউকাঠির উদ্দেশে রওনা হন ওই ৬ জন। এরপর উজিরপুরের আটিপাড়া এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

ওই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, অ্যাম্বুলেন্সে বহন করা মৃত শিশুটির বাবা ঝালকাঠির বাসিন্দা আরিফ হোসেন রাড়ি (৩৫), শিশুটির ছোট চাচা তারেক হোসেন কাইউম (২৭),  ফুপু সুরাইয়া আক্তার শিউলী (৩০), দাদি কোহিনূর বেগম (৬৫) এবং মামা (আরিফের শ্যালক) নজরুল ইসলাম (২৮)।

নিহত আরিফ ও তার অপর দুই ভাই-বোন হচ্ছেন ঝালকাঠির বাউকাঠি গ্রামের মৃত পল্লী চিকিৎসক সিরাজুল ইসলামের সন্তান। এই পরিবারের তিন ভাই-বোন ও তাদের মায়ের করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ।

নিহত অ্যাম্বুলেন্স চালক আলমগীর কবির কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা।

এদিকে, এ দুর্ঘটনার পর বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতেই নিহত আরিফের ফুফাতো ভাই রাশিদুল হাসান সুমন বাদী হয়ে সড়ক পরিবহন আইনে কাভার্ডভ্যানের চালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে উজিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেনে। দুর্ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে কাভার্ডভ্যানের চালক ও হেলপার।

এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বরিশালের পুলিশ সুপার ‍সাইফুল ‍ইসলাম বিপিএম(বার) জানিয়েছেন, মামলার ‍আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102