কিন্তু সেই হামলার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িতদের কাউকেই বিচারের আওতায় আনা হয় নি।
হামলার শিকার হওয়া শামস জেবিন বলেন, বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির অপর এক সদস্যের বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানানোর জেরে পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই কয়েকজন শিক্ষার্থী তার ওপর হামলা করেছিলো। ওইসময় হামলাকারীরা বলেছিলো, তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছে শামস জেবিনকে তুলে নিয়ে যেতে।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনা ঘটার পর ওই দিনই পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আব্দুর রহিম খানকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু একমাস পেরিয়ে গেলেও উক্ত তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রদান করতে ব্যর্থ হয়।
এরপর ২০ অক্টোবর পুনরায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট উক্ত তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন রফিকুন্নেসা আলী এবং সদস্য সচিব ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদ। তবে দ্বিতীয়বার তদন্ত কমিটি গঠনের পরও এক বছর পার বিচারের বিষয়টি তদন্ত কমিটিতেই আটকে আছে।
হামলার শিকার শামস জেবিন আরো জানান, তিনি তদন্ত কমিটির নিকট তার বক্তব্য প্রদান করেছেন এবং মূল হামলাকারীদের পরিচয়ও জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নূরউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, “এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন অফিসে রয়েছে।
শৃঙ্খলা বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হলেই আমি প্রতিবেদনটি উপাচার্যের নিকট প্রদান করবো এবং শৃঙ্খলা বোর্ড প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।” অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সমস্যাকে ইঙ্গিত করে বশেমুরবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান বলেন, “রুটিন দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একের পর এক সমস্যা সামনে আসায় এবং এরপরই ছুটি শুরু হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হয় নি।
” দীর্ঘ একবছরেও কেন মেলেনি বিচার,কেনই বা হামলাকারীদের ব্যাপারে কোনো বিচার আজও নয় সে বিষয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা। ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে একুশে টিভি অনলাইনের বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি মাইনউদ্দিন পরান বলেন, “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া কে বহিষ্কার করা হলো, তখন বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির বেশ কয়েকজন সদস্য তার পাশে দাড়িয়েছিলো যাদের মধ্যে শামস জেবিন ছিলেন অন্যতম।
আর এ কারণেই তার ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালায় তৎকালীন ভিসির লালিত বাহিনী। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো হামলার ১ বছর পার হলেও এখনও সেই চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, যা বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই নামান্তর।
” পরান আরো বলেন,” আমরা চাই হামলাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক এবং ক্যাম্পাসে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।” উল্লেখ্য, স্বৈরাচারী আচরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগে প্রবল ছাত্র আন্দোলনের পর ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন বশেমুরবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় সত্য প্রকাশে স্বাধীন