করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আজ সোমবার থেকে দেশের সব পর্যটন এলাকা বা স্পটে লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি জানান, ওই এলাকাগুলোতে লকডাউনের পাশাপাশি জনগণের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে ফের কড়াকড়ি অবস্থানে যাচ্ছে সরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আমরা একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। আজ বিকেলে সেখানে একটা প্রোগ্রাম আছে। তারপরই চূড়ান্ত একটা সিদ্ধান্ত আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবারই দেশের কিছু এলাকার জন্য এ ধরনের ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি—এসব এলাকায় যাওয়া-আসা বন্ধ করা, বিয়েশাদি অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পিকনিক এগুলোও বন্ধ করা।
‘যেখানে জনসমাগম হয় সেসব অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধ আসতে পারে। তার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন থাকতে পারে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কিছু প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এগুলো নিয়ে রোববার আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা জারি করবেন।
১৬ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় এসব পরামর্শসহ ১২টি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
পর্যটন এলাকা হিসেবে গত কয়েক বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সাজেক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রস্তাবগুলো সভায় আলোচনা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে আজও (রোববার) আলোচনা হয়েছে।
‘এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে নির্দেশনা দিলে সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব।’
এই প্রস্তাবের বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সভায়। পরে মূল বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার মুখ্য সচিবের সঙ্গে। সেখানে বলা হয়েছে, সারা দেশ একবারে লকডাউন এখনই নয়। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে।’
অবশ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক কারিগরি কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম মনে করেন, লকডাউনে যাওয়ার বাস্তবতা নেই বাংলাদেশে।
এই চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘১২ দফার বিষয়ে আমি জানি না। তবে করোনার ঊর্ধ্বগতি থাকলেও বাংলাদেশের মতো দেশে লকডাউনের প্রয়োজন নেই। সর্বোচ্চ আমরা মকআপ করতে পারি।’
মকআপের ব্যাখ্যায় তিনি বলন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা।