মিয়ানমারের সামরিক শাসক বলেছে, ‘নাগরিক অবাধ্যতা মিয়ানমারকে ধ্বংস করছে।’ বুধবার (৭ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
জান্তার প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লেইং বুধবার (৭ এপ্রিল) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলন হাসপাতাল, স্কুল, রাস্তাঘাট, অফিস এবং কারখানার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনী গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে কমপক্ষে সাতজন নিহত ও বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে। বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে একটি চীনা মালিকানাধীন কারখানায় বিক্ষোভকারীরা আগুন লাগিয়ে চীনা পতাকাও পুড়িয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।।
বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত সামরিক জান্তার হাতে ৫৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তবে বিরোধীদের দমন করার জন্য সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করা সত্ত্বেও দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার উত্তর-পশ্চিম শহর কালে অং সান সু চির বেসামরিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করায় বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে জানায় একজন স্থানীয় বাসিন্দা। মিজিমা ও ইরাওয়াদ্দির সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, পাঁচজন মারা গিয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
কালের বাসিন্দা জানায়, তিনি সাক্ষীদের থেকে পাঁচটি লাশের ছবি সংগ্রহ করেছেন। ইয়াঙ্গুনের কাছে বাগো শহরে দু’জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়েছে, মিয়ানমার নাউ নিউজ সংবাদমাধ্যমে এ কথা বলা হয়েছে।
বুধবার ইয়াঙ্গুনে চীনা মালিকানাধীন জেওসি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে এবং দমকল বিভাগ জানিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি এবং ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কোনো বিবরণ দেয়া হয়নি।
মিয়ানমারে চীনকে সামরিক জান্তার সমর্থক হিসেবে বিবেচনা করছে বিক্ষোভকারীরা। গত মাসে ইয়াঙ্গুনে চীন বিনিয়োগকারী ৩২টি কারখানার বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
আরো পড়ুন>>>>মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে ৪৩ শিশুর মৃত্যু
অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গুলি চালিয়ে কয়েক ডজন শিশুসহ ৫৮১ জনকে হত্যা করেছে এবং ৩৩৫০ জনকে গ্রেফতারসহ এখনও ২৭৫০ জনকে আটক করে রাখা হয়েছ।