November 25, 2024, 10:43 am
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

আজ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহকর্মী বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক চৌধুরীর ১৩তম মৃত্যু বার্ষিকী

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, মে ৭, ২০২১
  • 184 দেখুন

আজ (৭ মে) কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কৃতি সন্তান মুক্তিযুদ্ধের অকুতোভয় সৈনিক,অন‍্যতম সংগঠক বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা ও এই অঞ্চলের সবার প্রিয় শিক্ষক একজন সাদা মনের মানুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও সাবেক গভর্নর শামছুল হক চৌধুরীর ১৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী। আজকের এই দিনে বরেণ্য এই মুক্তিযোদ্ধা শেষ নি:শ্বাস ত‍্যাগ করেন।

মৃত্যুর মাধ্যমেই পৃথিবীর সাথে মানুষের চীরদিনের জন‍্য বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু কিছু ব্যক্তি মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকেন মানুষের মধ্যে, তাদের মহান কীর্তির জন্য। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, গৌতম বুদ্ধ এঁরা সকলেই মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করে এক সময় মৃত্যুবরণ করেছেন কিন্তু তাঁরা আজও আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন তাঁদের মহান কীর্তির জন্য।

সক্রেটিস, এরিস্টটল নেই, রয়েছে তাঁদের দর্শন; শেক্সপিয়র, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল নেই, রয়ে গেছে তাঁদের কাব্য। এভাবেই মানুষ বেঁচে থাকে তাদের মহান কর্মের মাধ্যমে। তেমনীভাবে ভুরুঙ্গামারীর মানুষের মাঝে স্মরনীয় বরনীয় হয়ে আছেন মুক্তিযুদ্ধের অন‍্যতম সংগঠক শামছুল হক চৌধুরী।

তার মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার (৭ মে) তার বাসভবনে পবিত্র কোরআন খতম, উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও শামছুল হক চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের উদ‍্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করেছে।

বর্নাঢ‍্য এই রাজনীতিবিদ মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও মূক্তিযুদ্ধে ব‍্যাপক ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতায় এই অঞ্চলে যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাগন অনুপ্রেরণা লাভ করেন এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে ভূরুঙ্গামারী থানা প্রথম মুক্তি লাভ করে। শুধু রাজনীতি নয় শিক্ষক হিসেবেও তিনি ব‍্যাপক সফলতা অর্জন করেন। তিনি ছিলেন একজন সাদা মনের মানুষ ছিলেন এই অঞ্চলের মাটি ও মানুষের নেতা।

শামছুল হক চৌধুরী ১৯৩৬ সালের ৩০ জুন ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকের ছড়া ইউনিয়নের চরবলদিয়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি তৎকালীন বাংলা সোনাহাটের রাজা শ্রীশ চন্দ্র রায় স্কুল থেকে (ইংরেজী মাধ্যম) প্রাথমিক শিক্ষা ভুরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৭-৫০) থেকে মাধ‍্যমিক রংপুর কারমাইকেল কলেজ (১৯৫১-৫৩) এইচএসসি ও আনন্দমহোন কলেজ (১৯৫৩-৫৬) ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৫৭-৫৮) থেকে এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন।

ছাত্র অবস্থায় তিনি ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ রংপুর অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ভাষা আন্দোলনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। পরে তিনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলীমলীগ বিরোধী মোর্চা যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির তৎকালীন কুড়িগ্রাম মহকুমার সংগঠক নির্বাচিত হন এবং এই অঞ্চলে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থীর পক্ষে ব‍্যাপক প্রচার চালান।

১৯৫৮ সালে সোনাহাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ১৯৫৯ সালে ভুরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

পরে গোটা পাকিস্তানে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে ১৯৬৬ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে সম্মিলিত বিরোধী দল (কপ)এর ভুরুঙ্গামারী থানা স্টিয়ারিং কমিটির সংগঠক নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ তীব্র গন আন্দোলনের সময় তিনি তৎকালীন কুড়িগ্রাম মহকুমার গন অভ্যূথানের নেতৃত্ব (কুড়িগ্রাম জেলার) দেন।

পরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে ০৬ নং সেক্টরের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের সভাপতি, এবং উত্তর বঙ্গের (কুড়িগ্রাম জেলার) মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক এর দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আইন পরিষদ এর সদস্য (এম সি. এ) নির্বাচিত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় অংশগ্রহন করেন। ১৯৭৩ সালে সাধারন নির্বচনে জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে তিনি গভর্নর নিযুক্ত হন।

১৯৭৭-১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, কুড়িগ্রামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ও ১৯৭৯ সালে সাধারন নির্বচনে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন।

পরবর্তীতে এরশাদ সরকার উপজেলা পরিষদ গঠন করলে ১৯৮৫ ও ১৯৮৯ সালে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক গনসংযোগ করেন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ এর মনোনীত প্রার্থী হিসাবে কুড়িগ্রাম-১আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করেন ।

২০০৮ সালের ০৭ মে উত্তর বঙ্গের এই অবিসংবাদিত নেতা, বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা ও বর্নাঢ্য রাজনৈতিক শামছুল হক চোধুরীর জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

বরেণ্য এই রাজনীতিবিদের বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম‍্যান মো. নূরন্নবী চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমার বাবা অসাধারণ অবদান রেখেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শামছুল হক চৌধুরী স্মূতি পরিষদের আহবায়ক মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শামছুল হক চৌধুরী ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহচর এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আজীবন সহযোদ্ধা। এই মহান নেতার মৃত্যুদিনে আমরা তার জীবনাদর্শ থেকে নতুন করে প্রেরণা লাভ করতে পারি। আমরা তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।

কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খ ম আতাউর রহমান বিপ্লব বলেন, সুর্যের দীপ্তিমান আলোকবর্তিকা নিয়ে যিনি পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্রকে আলোকিত করেছেন তিনি হলেন জনমানুষের শিক্ষক শামসুল হক চৌধুরী। আমরা নতুন প্রজন্ম তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।

শামছুল হক চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের পক্ষে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে বিকেল সাড়ে তিনটায় স্বাস্থ বিধি মেনে স্মৃতিচারণ মূলক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
শামসুল হক চৌধুরীর নাতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102