একসময়ের গরিবের ফসল কাউন, এখন উচ্চ দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষিরা। তাই আগ্রহ বাড়ছে কাউন চাষে। এছাড়া গরিবের খাদ্য কাউনের চাল এখন ধনীদের বিলাসী খাবারে পরিণত হয়েছে। কাউনের চাল দিয়ে পায়েস, খিচুড়ি, ক্ষির— এসব এখন ধনীদের প্রিয় খাদ্য।
কুড়িগ্রামে ছোট-বড় মিলে ১৬টি নদ-নদী রয়েছে। এসব নদ-নদীর অববাহিকায় বালু মাটিতে ব্যাপক পরিসরে কাউন চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। অন্যান্য এলাকাতে কাউন চাষ বিলুপ্তির পথে গেলেও এখানকার কৃষকরা ঝুঁকছেন কাউন চাষে। কারণ খরচ কম লাভ বেশি কাউন চাষে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী এ মৌসুমে জেলায় ৬১০ হেক্টর জমিতে কাউন চাষ হয়েছে। কাউনচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে কাউন চাষে সব মিলে ব্যয় হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমিতে কাউন উৎপাদন হয় ১৫-১৮ মণ। প্রতি মণ কাউন বাজারে বিক্রি হয় ১৩ থেকে ১৪শ টাকা। কাউন বপন করা থেকে পরিপক্ক হতে সময় লাগে প্রায় তিন মাস।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক ছকমাল মিয়া বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে কাউন চাষ করছি। ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এই দুই বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে আমার ১৫ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে ভালোই লাভবান হতে পারব বলে আসা করছি। আগাম যদি বৃষ্টি হতো তাহলে আরও ভালো ফলন হতো। তার পরেও যা হয়েছে খুব ভালো।
ওই গ্রামের ফারুক ও রহমত আলী বলেন, আমাদের এলাকায় কাউনের চাষ খুবই ভালো হয়। এখানকার কৃষকরা প্রতি বছর সবাই কাউন চাষ করে। কারণ কাউন চাষে খরচ কম। ফলন ভালো হলে ১৫ থেকে ১৮ মণ পর্যন্ত এক বিঘা জমিতে কাউন হয়।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার কাউনের ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কাউন বিক্রি করে লাভবান হতে পারব।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, আমরা গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে উন্নত মানের জাত সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছি। জাতে ফলনটা কাঙ্ক্ষিত মানের হয়। আর কাউন-চিনা একসময় গরিবের ফসল ছিল, এখন উচ্চ দামের ফসল হয়ে দাঁড়িয়েছে। দামও অনেক ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা।