দেখতে সুন্দর, খেতে সুস্বাদু, ভালো ফলনে উপযুক্ত মাটির সাথে আবহাওয়াও বেশ মানানসই। উৎপাদন হয় অনেক ভালো। খুশি কৃষক ও তার পরিবার। ফলে লতি উৎপাদন ও বিক্রি করে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার কৃষকরা আজ বেশ স্বাবলম্বী। এ লতি চাষকেই তারা নিয়েছে পেশা হিসেবে। তাই কৃষকের কঠোর পরিশ্রমের ফসল কচুর লতি আজ শুধু মাধবপুর নয় দেশের সীমানা পেড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে। বিশেষ করে এ কচুর লতি যাচ্ছে ইংল্যান্ড, ইতালিসহ ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। লতি বিক্রিতে প্রতি সপ্তাহে নগদ টাকা পেয়ে খুশি এলাকার কৃষকরা। দিন দিন ওই এলাকায় লতি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। জানা যায়, মাধবপুর উপজেলায় ১শ’ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয় ২৫ মেট্রিক টন লতি, সে হিসেবে ১শ’ হেক্টরে উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন লতি। মাধবপুর ছাড়াও গোয়ালনগর, আদাঐর, গোপালপুর, মিঠাকুপুর, ঘিলাতলী, আউলিয়াবাদ, পানিহাতা, বুল্লা এলাকায় লতি চাষ হচ্ছে। বছরে সাত থেকে আট মাস লতি তোলা যায়। লাভ বেশি হওয়ায় ওই এলাকার মানুষ লতি চাষে ঝুঁকছেন।
মাধবপুর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে ঘরে লতি তোলা, পরিষ্কার ও বাঁধাইয়ের উৎসব। পরিবারের নারী-পুরুষ সবাই ব্যস্ত লতি চাষ নিয়ে। পুরুষরা জমি থেকে লতি তুলে বাড়ি আনছেন। ঘরের সামনে নারীরা লতি পরিষ্কার করছেন। অন্য পরিবারের নারীরাও তাদের সহযোগিতা করছেন। এখানে প্রতিদিন ১০ মেট্রিক টনের বেশি লতি সংগ্রহ করেন ব্যবসায়ীরা। গ্রামের এক স্থানে লতি জড়ো করা হয়। সেখান থেকে পিকআপ ভ্যানে লতি চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
হোসেনপুর গ্রামের শাজান মিয়া জানান, তিনি প্রতিবেশীর লতি পরিষ্কারে সহযোগিতা করছেন। তারা প্রতি কেজি লতিতে এক টাকা করে পাচ্ছেন। তিনি দিনে ১০০ থেকে দেড়শ কেজি লতি পরিষ্কার করতে পারেন। তবে কয়েক বছর ধরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষ বেড়েছে। ধান চাষে মৌসুম শেষে টাকা পান। লতি চাষে প্রতি সপ্তাহে টাকা পাচ্ছেন। তাই তিনি লতি চাষে মনোযোগ দিয়েছেন। মাধবপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন হাসান বলেন, মাধবপুরে লতির সুনাম দেশজুড়ে। এ অ লে দিন দিন লতি চাষ বাড়ছে। এখানে একটি লতি প্রসেসিং সেন্টারের দাবি কৃষকদের। এ বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।