November 27, 2024, 8:15 pm
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

মাধবপুরে মহামারি করোনা ছুঁতে পারেনি চা শিল্পকে

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, জুলাই ৯, ২০২১
  • 192 দেখুন

কঠোর লকডাউনে আর করোনা ছুঁতে পারেনি চা শিল্পকে করোনায় বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। স্থবির হয়ে গেছে সব কর্মকান্ড। চরম আঘাত এসেছে অর্থনীতিতে। বিশ্বের মতো বাংলাদেশকেও বেশ ধাক্কা দিয়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস অর্থনীতির গতি সচল রেখেছে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সচল ছিল দেশের অন্যতম অর্থকরী চা শিল্প। খোলা ছিল চা বাগান ও কারখানা। এতে বাগান মালিকদের পাশাপাশি বেঁচেছে শ্রমিকদের জীবন।

চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনায় চা বাগান বন্ধ রাখলে পথে বসতে হতো তাদের। বিশেষ করে চরম খাদ্য সংকটে পড়ত এ শিল্পের দেড় লাখ শ্রমিক ও তাদের পরিবার। আশার কথা হচ্ছে, খোলা রাখার পরও এখন পর্যন্ত চা বাগানের কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। গত জুনের শেষ দিকে চায়ের রাজধানী খ্যাত হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে দেখা যায়। এ সময় চা শিল্পের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর চা বাগান খোলা রাখার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সৌরভ পানতাতি জানান, বাগান পরিষ্কার করার দায়িত্ব তার। খড়ি তোলেন। ৮ ঘণ্টা ডিউটি। দৈনিক ১২৫ টাকা পান। ছয় সদস্যের পরিবার তার এই আয়ে চলে। এই আয়ে চলতে কষ্ট হয়। কাজ বন্ধ থাকলে খুবই কষ্ট, অভাব দেখা দেয়। কাজ থাকলে খাবারের জোগান হয়, না চললে নেই। একই বাগানের শ্রমিক পলাশ কৈরী জানান, চা বাগানে ওধুষ দেন। দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করেন, ১২৫ টাকা করে পান। করোনায় ৬ ঘণ্টা কাজ করেছেন। মালিক সব কিছু চালিয়ে নিয়েছেন। খাবার বা আয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। পুরো বাগানে সাড়ে ৪ হাজার লোক কাজ করে। যে আয় তাতে কোনো রকম চলে যায়। এ বাগানে চা-পাতা তোলেন সাধন সাওতাল। তিনি বলেন, দৈনিক ২৪ কেজি পাতা তুললে ১২৫ টাকা পাই। এ দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট তো হবেই। জিনিসপত্রের যে দাম। অসুস্থ হলে তো ইনকাম নেই। অবশ্য চিকিৎসা আছে। করোনায় চা বাগান সচল রাখার বিষয়ে সাধন বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন। ওকে দোয়া করবো না? ও আছে বলে আমরা অনেক সুখে আছি। তাকে কখনো নিন্দা করবো না।

তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক এমদাদুর রহমার মিঠু বলেন, এখন পর্যন্ত করোনায় একজন চা শ্রমিকও আক্রান্ত হয়নি। করোনা চা শিল্পকে ছুঁতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সব সচল রেখেছি। যে কারণে মালিকদের পাশাপাশি শ্রমিকরাও বেঁচে গেছে। তিনি বলেন, করোনায় চা বাগান বন্ধ থাকলে পথে বসতে হতো। বাগান জঙ্গল হয়ে চাষের অনুপোযোগী হয়ে যেত। মালিক ও শ্রমিক উভয়ে চরম সংকটে পড়ত। এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ের লোক ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ দুই হাজার মানুষের একটি পরিবার। সবার জীবন ও জীবিকা এই বাগানের ওপর। এটি সচল থাকলে এখানকার সবার জীবনই সচল থাকে। ন্যাশনাল টি কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা মনে করি, চা বাগানের উন্নয়ন, প্রোডাকশন ও চায়ের মানোন্নয়নের পাশপাশি চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন অবশ্যই করতে হবে। তারা ভালো থাকলে বাগান ভালো থাকবে, প্রোডাকশন বৃদ্ধি পাবে। সেই ব্রত নিয়ে কোম্পানির নির্দেশনায় আমরা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করি। চা শিল্পের কার্যক্রম লকডাউনেও চলমান রাখায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে চায়ের চাহিদা বেড়েছে। রফতানি চাহিদাও আছে। আমাদের লোকাল চাহিদা বাড়ায় রফতানি কমেছে। উৎপাদন আগের জায়গায় স্থির রয়েছে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, জেলায় ২৪টি বড় চা বাগান রয়েছে। সেখানে যে চা শ্রমিক রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রতি সুদৃষ্টি দিয়েছেন। তাদের বিভিন্ন ভাবে মানবিক সহায়তা করছেন। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে সবকিছু বন্ধ থাকলেও চা বাগান একদিনের জন্যও বন্ধ ছিল না। চা শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত কাজ করতে পেরেছেন। যে কারণে তাদের আহারে বা কর্মসংস্থানে কোনো সমস্যা হয়নি। আমরাও চেষ্টা করে যাচ্ছি, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী তাদের পাশে দাঁড়ানোর। তাদের যেন কোনো রকমের অর্থ, কর্মসংস্থান বা অন্য কোনো সমস্যা না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। উল্লেখ্য, সরকারি হিসাব মতে, দেশে মোট ১৬৭টি চা বাগান। ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ ৯৬.০৭ কেজি এবং ২০২০ সালে ৮৬.৩৯ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। এছাড়া ২০২০ সালে রেকর্ড পরিমাণ ২.১৭ মিলিয়ন কেজি চা রফতানি হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102