প্রযুক্তির কাছে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কুড়িগ্রামের বেলগাছা ইউনিয়নে একযোগে নানা গ্রামীণ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী এ খেলার আয়োজন করেছে যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়েস বাংলাদেশ এর কুড়িগ্রাম জেলা শাখা।
গ্রামীণ খেলাগুলো ছিল বিস্কুট দৌড়, হাড়িভাঙ্গা, বালিশ খেলা, সুঁই সুতা, সাঁতার, বিবাহিত পুরুষদের জন্য মহিলাদের ছবির কপালে টিপ দেয়া, চোখ বেঁধে হাঁস ধরা, তৈলাক্ত কলার গাছে চড়া, রশি টেনে শক্তির খেলা, যেমন খুশি তেমন সাজ। সকল বয়সের ৮৮জন নারী পুরুষ ১১টি খেলায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে বিজয়ী ৩৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
সকাল থেকেই বেশ কৌতূহল নিয়ে ওই ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়া গ্রামে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধ বয়সী মানুষের আগমনে মিলন মেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠানটি। এসব খেলা দেখতে এলাকার সব বয়সী মানুষের অংশ গ্রহণে সৃষ্টি হয় এক আনন্দঘন পরিবেশ। দীর্ঘদিন ঘরবন্দী স্থবির জীবনে এক টুকরো স্বস্তি পেতে সবাই মেতে ওঠে এক নির্মল আনন্দ আর উচ্ছাসে। কিছুক্ষণের জন্য অনেকে যেন নিজের বয়স ভুলে ফিরে যান অতীতে কিংবা শৈশবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো: জাফর আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসান লোবান, অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাড.আহসান হাবীব নীলু। খেলাধুলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ইয়েস বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলা সভাপতি রেজওয়ানুল হক নুরনবী।
প্রতিটি খেলায় বিজয়ী ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জনকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সবাই পুরস্কার না পেলেও অংশগ্রহণ করতে পেরেই বাধভাঙ্গা আনন্দে ভাসছিলেন। বিশেষ করে নারীরা ছিলেন খুবই আনন্দিত।
জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বা শহরাঞ্চলে এ ধরণের খেলাধুলার আয়োজন করার জন্য তরুণ, যুবকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি আহবান জানান প্রধান অতিথি মো: জাফর আলী।
বিশেষ অতিথি অ্যাড.আহসান হাবীব নীলু বলেন, ’করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং খেলাধূলার মাঠে যাওয়ার বিধিনিষেধ থাকায় শিশু-কিশোরদের করেছে মোবাইল-ইন্টারনেটমুখী। ফলে ন্যুনতম বিনোদনের অভাবে অনেক শিক্ষার্থী হয়েছে হতাশাগ্রস্থ। এ ধরণের খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে।
ইয়েস বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম শাখার সভাপতি রেজওয়ানুল হক নুরনবী জানান, সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায় থেকে সঠিক শিক্ষা ও খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।