প্রতি বছর শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্দশায় পড়েন দেশের উত্তরের জেলাগুলোর মানুষজন। সরকারি সহায়তা মিললে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা কম। দারিদ্র্য সীমার নিচে থাকায় শীতে এই অঞ্চলের মানুষগুলোর পোহাতে হয় বাড়তি ভোগান্তি। সেই কথা মাথায় রেখে এবার উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামে কম্বল বিতরণ করেছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘লাভ ফর আওয়ার কান্ট্রি (এলওসি)’।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের কলেজ মোড় এলাকায় শতাধিক ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করে এলওসি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি),খান মোহাম্মদ শাহারিয়ার, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার, ওমিকন গ্রুপের আইন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বাবু ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকরা।
এছাড়াও এলওসির পক্ষ থেকে শশরীরে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনটির স্টেয়ারিং বোর্ডের সদস্য, শেখ সজিব, আসিফ আব্দুল্লাহ, মেহেদি হাসান শিপন। কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এলওসির পক্ষ থেকে আরও যুক্ত ছিলেন- সারওয়ার হোসেন, আব্দুল্লাহ মামুন, রাজ রিয়াদ ও ইসমাইল হোসেন।
অনুষ্ঠানে সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহারিয়ার
বলেন, এলওসি একটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন,তারা আমাদের কুড়িগ্রাম জেলাতে এসে অসহায়দের মাঝে যে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই,আশাকরি পরবর্তীতেও তারা এ যাত্রা অব্যাহত রাখবে এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দাদের বাল্যবিবাহ না দিতে এবং সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে তিনি আহ্বান জানান।
সদর উপজেলা পাঁচগাছী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, ঠান্ডা উপেক্ষা করেই অনেক বৃদ্ধা মানুষ এখানে কষ্ট করে এসেছেন। ঠান্ডা নিবারনের জন্য আমাদের গায়ে যে পোশাক গুলি রয়েছে তা এখানকার অনেকের গায়ে নেই। এসব অসহায় মানুষদের শীত বস্ত্র দিতে ঢাকা থেকে যারা এসেছেন তাদের এটা ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
‘নতুন বছরের প্রতিদিন; দেশের জন্য ভালোবাসা অমলিন’ স্লোগানটি নিয়ে সংগঠনটি নিজস্ব উদ্যোগ ও সদস্যদের নিজ তহবিলের মাধ্যমে ছিন্নমূল মানুষগুলোর মাঝে এই কম্বল বিতরণ করছে। সেই সাথে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সবাই কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বিভিন্ন পরামর্শও দেওয়া হয়।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সবসময় দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে এলওসি। শীতের শুরুতে তাদের পক্ষ থেকে স্বল্প পরিসরে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। তারই অংশ হিসেবে আজকের এই কর্মসূচি। এলওসি বিশ্বাস করে সবাই এক সাথে কাজ করলে দেশ থেকে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব। এ সময় নিজেদের এমন কার্যক্রম ভবিষ্যতেও আরো বড় পরিসরে পরিচালনা করা হবে বলে জানায় তারা।
এর আগে করোনাকালীন এলওসির পক্ষ থেকে ১৫০০ পরিবারের মাঝে খাদ্যপন্য বিতরণ। ওই সময় ঢাকা জেলার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় এসব খাদ্যপণ্য বিতরণ করা হয়।
২০১১ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে এলওসি তার যাত্রা শুরু করে। এরপর সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য নির্বাচনে ‘ফ্রি ভোটিং ফর সুন্দরবন’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু হয়। দেশের চলমান সংকটে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এলওসি তাদের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করে।