কুড়িগ্রামের বন্যা কবলিত এলাকার দেড় হাজার মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে ‘গিফট ফর গুড’। জেলার বন্যা কবলিত এলাকাকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করে এই স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত নাগরিকদের প্রয়োজনীয় ওষুধও দেওয়া হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
গত ২২ জুলাই থেকে এই মেডিকেল ক্যাম্প শুরু হয়। যা আগামী বুধবার পর্যন্ত চলবে। এই কার্যক্রমে দুইজন চিকিৎসক, দুইজন নার্স ও সংগঠনের ১০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
কুড়িগ্রামে গিফট ফর গুড’র স্বেচ্ছাসেবক আনারুল ইসলাম রানা বলেন, ‘আমরা কুড়িগ্রামের বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করেছি। এরমধ্যে ১৬টি জোনে বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দিয়েছে। গত চারদিনে চারটি জোনে আমরা আমাদের মেডিকেল ক্যাম্প করেছি। আজও একটি জোনে কার্যক্রম চলমান।’
রানা বলেন, ‘প্রতিটি জোনে অন্তত আড়াই থেকে তিনশো রোগি পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মধ্যে ডায়রিয়া, কলেরা, চর্ম রোগের রোগিই বেশি। আমরা প্রতিদিন অন্তত দুইশো রোগিকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছি।’
গিফট ফর গুড’র পরিচালক মিঠুন দাস কাব্য বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতার একটি সীমাবদ্ধতা আছে। বন্যা শুরুর পর আমরা সেখানে গিয়েছি। যতটুকু সম্ভব খাদ্য, পানীয় সরবরাহ করেছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন বন্যা-পরবর্তী কার্যক্রম চলছে। আপনারা জানেন, বন্যার পর বন্যা কবলিত এলাকায় নানান রোগ-ব্যধি দেখা দেয়। কুড়িগ্রামের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে৷ এ বিষয়ে আমাদের আগে থেকেই নজর ছিল। তাই আমরা মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করছি। তবে আমাদের সেখানে যে টিমগুলো কাজ করছে, তাদের তথ্য মতে, প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের সাপোর্টটা কম। প্রতিদিন তিনশোর বেশি রোগি আসছে। আমরা আমাদের সক্ষমতায় দুইশো রোগিকে সেবা ও ওষুধ দিতে পারছি। আবার আমরা যে ১৬টা জোন করেছি, তার মধ্যে আমরা ছয়দিনে ছয়টা জোনে ক্যাম্প করতে পারব। ১০টা জোন বাকী থেকে যাবে। তবে সেখানেও অনেক রোগি আছে। এই মেডিকেল ক্যাম্পকে আরও দীর্ঘ করার চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সামাজিক সংগঠন গিফট ফর গুড। মিঠুন দাস কাব্যের নেত্রীত্বে তিন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক এই সংগঠনে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। বন্যা, ঘূর্নিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াচ্ছে সংগঠনটি। পাশাপাশি সমাজের অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যও কাজ করে যাচ্ছে গিফট ফর গুড।