কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে কামরুলের পরিবার।
জানা গেছে, জেলার রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের মনার কুটি গিদাল পাড়া গ্রামের মহসিন আলীর পুত্র কামরুল ইসলাম গত- ২০০৪ সালের অক্টোবর, বাড়ি থেকে মোল্লা পরিবহনে জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যে ঢাকা যাওয়ার সময় টাংগাইলের এলেংগা নামক জায়গায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয়।
এতে কামরুল ইসলামের দুটি পা সম্পূর্ণই ভেঙে যায় । পরে একটি পা কেটে ফেলে আর একটি পা নিয়ে ফিরে আসে বাড়িতে, কামরুল ইসলাম দুটি পা হাড়িয়ে শারিরিক ভাবে সুস্হ হয়ে, বিয়ে করেন, আরিফা বেগমকে, এখন তাদের ঘরে দুটি সন্তানও রয়েছে। ৩৫ বছরের কামরুল ইসলাম দীর্ঘ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে পঙ্গু হয়ে বাসায় ফিরে।
একটি অচল পা নিয়ে ১৬ বছর থেকে কামরুল ইসলাম পড়ে আছে বিছানায়। অর্থাভাবে তার অসহায় পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না, মা, বাবা, স্ত্রী সহ ছেলে মেয়ের খরচ চালাতে। কামরুল জানান, বাড়ি থেকে মোল্লা পরিবহনে ঢাকা যাওয়ার সময় টাংগাইলের এলেংগায় সডক দুর্ঘটনায় ১ ঘন্টা আমি অজ্ঞান ছিলাম। যখন আমার জ্ঞান ফিরে তখন অনেক মানুষ গোল হইয়া আমার পাশে দাঁড়াইয়া ছিল। কিন্তু কেউ ধরে নাই। আমি মারে-বাবারে বইলা চিল্লাইতে ছিলাম। পা দুইডা তখনই ভাইঙা গেছে। পা দিয়ে রক্ত বাইর হইতেছিল। এক বন্ধু পাশে ছিল, ওর থেকে গামছা নিয়া পা বাদছি। এক ঘণ্টা পরে আমারে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়া গেছে।
ওইখানে আমার পায়ে ব্যান্ডেজ করে। ডাক্তাররা বইল্লা দিল, ওরে বাসায় নিয়া যান, যা খাইতে চায় খাওয়ান। বেশি দিন বাঁচব না।’সকল সম্পদ ও আত্মীয়দের সহযোগিতায় চিকিৎসা হয় কামরুলের। ১৯ বছর বয়সে সডক দুর্ঘটনার শিকার কামরুল ইসলাম। এখন তার বয়স ৩৫ বছর। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শারীরিক নানা সমস্যাও। পাঁচ বছর মেয়াদী আলাদা পা-টি তার শরীরে রয়েছে ১০ বছর ধরে।
এজন্য তার অনেক সমস্যা হচ্ছে বলে জানান কামরুল। তার পায়ে অনেক ব্যথা জালা যন্রনা সহ্য করতে হচ্ছে । এখন শারীরিকভাবে আরোও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ঔষধ খাইতে হয় তাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবান দের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন ১৬ বছর ধরে পঙ্গু জীবনযাপন করছেন কামরুল ইসলাম। তিনি জানান সংসার জীবনে পরিবারের ভরণ-পোষণ – নিয়মিত ওষুধ কিনতে হয়।
আমি আর পারছিনা কিন্তু কামরুলের বাবা মহাসিন আলী কোন রকম গাছের ব্যবস্যা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ষাটোর্ধ এই অসহায় পিতা এরইমধ্যে বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। চিকিৎসা করাতে অনেক ছুটোছুটি করতে হয়েছে তাকে। সহায়সম্বল যা ছিল সবই ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ।
বর্তমান সম্বল বলতে শুধু এই ভিটামাটি টুকু ছাড়া আর কিছুই নেই। পরিবারের অন্য কোন কর্মজীবী না থাকায় বৃদ্ধ পিতা মহসিন আলী একমাত্র আয়ের এর উৎস দিয়ে স্স্ত্রী, ছেলের বউ, নাতি নাতনি এবং পঙ্গু ছেলের খাওয়া ও চিকিৎসার ভরসা। কিন্তু নিজের ব্যবস্যা না থাকায় পরিবারের খরচ চলাতে পারছেন না। পারছেন না সংসার চালাতে, পারছেন না অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে।নিজের অসহায়ত্বের বর্ননা দিতে গিয়ে কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ছেলেডারে নিয়া খুবই সমস্যার ভিতরে আছি। আমারে ছেলেডারে চিকিৎসা করাইতে দশ-বারো লাখ টাকা চলে গেছে।