November 1, 2024, 6:26 am
শিরোনাম:
মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে বিজয়ী মনোহরদীর সন্তান এ্যাড.কাজী হুমায়ুন কবীর

চা দোকানি থেকে মাদক বিক্রেতা, সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি

সোহরাব হোসেন, ঢাকা:
  • আপডেটের সময় : রবিবার, জানুয়ারি ৩১, ২০২১
  • 580 দেখুন

হাবিব সরকার ওরফে স্বাধীন। নামের মতোই তিনি মাদক ব্যবসায় অবারিত স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। এই স্বাধীন এক সময় বনানীতে চা বিক্রি করতেন। কিন্তু এই পেশা বাদ দিয়েছেন অনেক আগেই। পেশা বদলে তিনি এখন মাদক কারবারিতে জড়িয়েছেন, পাশাপাশি সাংবাদিকতাও করেন।

পুলিশের ভাষ্য স্বাধীনের বিরুদ্ধে একাধিক জিডি ও মাদক মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তার নামে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ রাজধানীর মহাখালী, কড়াইল, সাততলা এলাকায় স্বাধীন মাদকের কারবার করেন।

মাদক কারবারে সম্পৃক্ততা থাকায় ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ৬৮ পিস ইয়াবাসহ কড়াইলের স্থানীয় ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলের অফিসের সামনে থেকে স্বাধীনকে গ্রেফতার করে বনানী থানা পুলিশ। এ সময় তার সহযোগী টুন্ডা মমিনের পকেট থেকে ৮০ পিস ও অপর সহযোগী নাদিমের কাছ থেকে ৩৫ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। ওইদিন তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দেওয়া হয়। মামলা নং-৪১। ওই মামলায় এরইমধ্যে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হাবিব সরকার স্বাধীন একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার সঙ্গে ডিএনসিসি ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতা আলামিনের ভাই ট্যারা খোকনের সঙ্গে দোস্তি রয়েছে। এ ছাড়া মসজিদ পাড়ার সায়েদুল, আকাশ, সজীব, পিংকু, মামুন, শাকিল, ময়না, কড়াইলের তাসলি, জামান এদের সঙ্গে মাদক কারবার সূত্রে স্বাধীনের সম্পর্ক রয়েছে।

উল্লেখ্য, ট্যারা খোকন গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর হাতিরঝিলে ইয়াবাসহ ধরা পড়েন। এ পর্যন্ত স্বাধীনের সহযোগী এই ট্যারা খোকন অন্তত ২০ বার ধরা পড়েছেন। যার অধিকাংশ মাদকের মামলা।

গুলশান-বনানী-তেঁজগাও এ সব এলাকায় মাদকের কারবার করেন ট্যারা খোকন। অনেক সময় প্রেস স্টিকার লেখা স্বাধীনের মোটরসাইকেল এই ট্যারা খোকন ইয়াবা বহনের কাজে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া নারীঘটিত কেলেঙ্কোরি রয়েছে স্বাধীনের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী নারী জানান, “আমি কড়াইলে থাকি। মহাখালী ওয়্যারলেস গেট মোড় স্বাধীন আমাকে ডেকে কুপ্রস্তাব দেয়। সে আমাকে খারাপ কাজ করার প্রস্তাব দেয়। পাশাপাশি মাসে আমার কাছে দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।”

অভিযোগ রয়েছে, নিজের মাদকের ব্যবসা সহজ করার জন্য টাকার বিনিময়ে সাংবাদিকতার কার্ড করেছেন এই হাবিব সরকার স্বাধীন। তিনি নিজেকে সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার সাংবাদিক পরিচয় দেন। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক এস এম মোরশেদ।

মাদক মামলা থেকে স্বাধীনকে বাঁচাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রভাবিত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপি পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠিও দিয়েছেন পত্রিকাটির সম্পাদক।

প্রমান পাওয়া যায়, সাংবাদিক দাবি করা এই হাবিব সরকার স্বাধীন একজন কপি পেস্ট সাংবাদিক। জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত চার-পাঁচ বছরের পুরোনো প্রতিবেদন হুবুহু কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেন বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায়। অন্যের লেখায় শুধু নাম, স্থান, দিন, ক্ষন পরিবর্তন করে প্রতিবেদন তৈরি করেন তিনি। সৃজনশীল কিছু লেখার যোগ্যতা তার নেই।

অভিযোগ রয়েছে সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজিও করেন স্বাধীন। কড়াইলের শ্রমিক লীগ নেতা দেলোয়ারের কাছ থেকে তিনি এককালীন ১০ হাজার টাকা চাঁদা নেন। দেলোয়ার বলেন, “এককালীন ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা নেওয়ার পাশাপাশি মাসে আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বাধীন আমার নামে মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়েছে।”

স্বাধীনের বিরুদ্ধে চাঁদার অভিযোগ করেন মহাখালী সাততলার অটো শ্রমিক ও শ্রমিক লীগ নেতা শামীম। তিনি বলেন, “আমার কাছ থেকে প্রতিমাসে দুই হাজার করে চাঁদা চেয়েছিল স্বাধীন। আমি দিতে রাজি না হওয়ায় সে আমার নামেও নিউজ করে অপপ্রচার করেছে।”

তবে নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে হাবিব সরকার স্বাধীন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মামলা দেওয়া হয়েছে। চাপে পড়ে পুলিশ এই মামলা দিয়েছে। আমি নির্দোষ। তারপরও আমার নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আমি এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমি লিখিত দিয়েছি। আমি যে নির্দোষ আমার কাছে তার প্রমাণ আছে।”

চাঁদা চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বাধীন বলেন, “আমি যদি চাঁদা দাবি করি তাহলে আদালতে এর প্রমাণ হবে। যারা অভিযোগ করেছে তারা প্রমাণ নিয়ে আদালতে যাক।”

স্বাধীনের বিষয়ে ডিএনসিসি ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসিরের প্রতিনিধি আতর আলী বলেন, “আমাদের এই এলাকায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার রয়েছে। আমরা মাদক নির্মূল করতে চায়। স্বাধীনের মাদক ব্যবসা থামাতে গিয়ে আমরাও আজ তার চক্রান্তে মাদক ব্যবসায় পরিণত হয়েছি। আমরা নাকি মাদক ব্যবসা করি? জনগণের মারধরের ভয়ে স্বাধীন তো এই এলাকায় থাকতে পারে না।”

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক মামলায় বনানী থানায় গ্রেফতারের পরে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে বনানী থানার সাবেক ওসি বর্তমানে বিমান বন্দর থানার (ওসি) বি এম ফরমান আলীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে স্বাধীন। যা এখনো চলমান। তাকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেন বনানী থানার এসআই সুজন সাহা ও এএসআই ইমরান। তাদের বিরুদ্ধেও চালাচ্ছেন অপপ্রচার।

অথচ গত ১১ মে ২০১৮, ‘মাদক চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের দমনে এগিয়ে বি এম ফরমান আলী, ওসি বনানী থানা’ শিরোনামে অপরাধ বিচিত্রায় হাবিব সরকার স্বাধীনের লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটিতে ওসি সাহেবকে তেল মারার কোন কমতি ছিলনা। ফরমান আলীর অনেক সুনাম তুলে ধরেছেন প্রতিবেদনে।

একইভাবে তেল মেরে গত ৬ অক্টোবর ২০১৮, ‘সন্ত্রাস,জঙ্গি ও মাদকব্যবসায়ীদের সাথে কোন আপোষ নেই বনানী থানার (ওসি) বি এম ফরমান আলী’ শিরোনামে হাবিব সরকার স্বাধীনের লেখা আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় অপরাধ বিচিত্রায়। এতেও ওসির অনেক গুনগান গেয়েছেন তিনি। ইয়াবাসহ গ্রেফতার করার কারণে এই একই ওসি স্বাধীনের চোখে খারাপ হয়ে গেল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102