কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজাহারুল ইসলামের ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে এক গৃহ পরিচারিকার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে ধানমন্ডির অফিসার্স কোয়াটার্স এর ৭ নম্বর রোডের ৪নং বৈকালী বাসার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে ঘটনার পর নিহতের স্বজনদের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে রাতে লাশ দাফনে বাঁধা দেয় নিহতের গ্রামের বাড়ি মনোহরদীর নয়াপাড়া গ্রামবাসী।
গ্রাম বাসীর অভিযোগ ,মাজাহার যুবলীগ নেতা, তাঁর স্ত্রী জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (এন্এস্আই) উপ-পরিচালক আফরোজা আঞ্জুম ফেন্সি ।ফলে ভয়ভীতির কারণে অথবা লোভে পড়ে নিহতের স্বজনরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে রহস্য জনক আচরণ করছে।
নিহত গৃহ পরিচারিকার নাম মাছুমা আক্তার (১৮)। সে নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীনের মেয়ে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, কৃষক জয়নাল আবেদীনের ৪ মেয়ে এক ছেলের মধ্যে মাছুমা আক্তার ছিল দ্বিতীয়। অভাব অনটনের সংসারে সন্তানদের ভরণ পোষণ করতে না পেরে দুই বছর পূর্বে মেয়ে মাছুমা আক্তারকে ঢাকায় কাজী মাজাহারুল ইসলামের বাড়ির গৃহ রিচারিকার কাজে পাঠায় বাবা-মা। এক বছর থাকার পর মাছুমা বাড়িতে এলে অজ্ঞাত কারণে ঢাকা ফিরতে চায়নি মাছুমা। অবশেষে বাবা-মায়ের জোরা-জুরিতে কয়েক মাস পরে ঢাকায় আবার কাজে যোগ দেয় মাছুমা।
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে মাছুমা তার কক্ষে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ পরও বের না হওয়ায় বাসার লোকজন তাকে ডাকা ডাকি করে। ভিতর থেকে কোন উত্তর না পেয়ে দরজার উপরে কাচের গ্লাস দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখাযায়। পরে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে ধানমন্ডি থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। সুরত হাল শেষে লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হয়। পরে মাছুমার পরিবারের লোকজন গিয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। মঙ্গলবার সকালে ওই লাশ দাফন করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহত মাছুমার বাড়িতে কয়েক যুবক তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের মধ্যে একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফকরুল ইসলাম রাকিব। স্থানীয় রাজনীতিতে রাকিব যুবলীগ নেতা কাজী মাজাহারু লইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সাংবাদিকের আগমনে তারা হতচকিয়ে উঠেন।
জানতে চাইলে মাসুমার বাবা জয়নাল আবেদীন জানান, মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ঢাকায় গিয়ে লাশ মর্গে দেখতে পাই। তবে কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা জানতে পারিনি।
তবে স্বজনদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় গ্রাম বাসী। পাড়া তলা গ্রামের গোলাম মোস্তফা বলেন, কি কারণে মাছুমা আত্মহত্যা করেছে তা আমাদের কারও জানা নেই। পরিবারের আচরণ ও রহস্যজনক। তাদের কে হয় তো ভয় ভীতি দেখানো হয়েছে, নয়তো লোভ দেখানো হয়েছে। যাদের কারণে মাছুমা মৃত্যুকে বেঁচে নিয়েছে পুলিশের নিকট সে যতই প্রভাবশালী হোক আমরা তাদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া (পিপ্এিম) বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এটা আত্মহত্যা মনে হয়েছে। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। নিহতের ময়নাতদেন্তর রিপোর্ট পেলে পারিপাশ্বিক ঘটনা তদন্ত করে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন সম্ভব হবে। কাজী মাজহারুল ইসলাম মনোহরদী পৌর এলাকার মৃত কাজী কফিল উদ্দিনের ছেলে।
বাংলাদেশ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন ; গতকাল ১২.৪০ কাজের মেয়ে মাসুমাকে ড্রাইভারকে খাবার দিতে বলেন সে খাবার দেওয়া জন্য রুমে চলে যায়। অনেক সময় অতিবাহিত হলে ডাকাডাকি ও দরজা ধাক্কা ধাক্কি করে কোন সাড়া না পেয়ে রুমে ফাকা জায়গা দিয়ে দেখতে পান সে ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে দেখে ধানমন্ডি থানায় খবর দেয়