প্রেমিক থেকে স্বামী হওয়া মানুষটির, মানসিক নির্যাতনের সাথে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। তারপরও দাঁতে দাঁত চেপে সয়ে যাওয়ার পণ করেন কিশোরী নববধূ। এরই মধ্যে বছর ঘুরতে না ঘুরতে নিজ গর্ভে আরও এক প্রাণের অস্তিত্ব অনুভব করেন। মা হওয়ার স্বপ্নে আবারও বিভোর হয়ে পড়েন। কিন্তু থেমে থাকেনি নির্যাতন। ভেবেছেন, হয়তো সন্তানের জন্ম হলে মায়ায় পড়ে নির্যাতন চিরতরে বন্ধ হবে। ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম হলে খুশির ঝলকে নির্যাতনে কিছুটা ভাটা পড়ে। কিন্তু সময়ের সাথে মিলিয়ে যায় সবকিছু।
যৌতুকের দাবিতে কথায় কথায় চলতে থাকে মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন, নষ্ট করা হয় গর্ভের সন্তান। এমনই রোমহর্ষক নির্যাতনের শিকার হয়ে শেষমেস আইনের আশ্রয় নিয়েছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের স্কুল শিক্ষক মেসবাহুল আজমের মেয়ে তামান্না বেগম (২২)। তার অভিযোগ, মামলা করলেও আসামি গ্রেফতারে তালবাহানা করছে পুলিশ। এ নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তামান্না বেগমের স্বামীর নাম নাইমুল ইসলাম লিমন (২৬)। তিনি উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের দাড়িকা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ জানান, প্রেমের বিয়ে হলেও বিয়ের কিছু দিনের মাথায় তিনি জানতে পারেন তার স্বামী মাদকাসক্ত। এ নিয়ে তাকে বাধা দিতে গেলে তার ওপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। তারপর শুরু হয় যৌতুকের চাপ। প্রথম সন্তানের জন্ম হলে মুখ বুজে সব সহ্য করলেও যৌতুকের চাপে নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। স্বামীর সাথে যোগ দেন শ্বশুরও। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়িতে ফিরে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে চাইলে উভয় পরিবারের আলোচনায় ‘মিমাংসা’ করে আবারও সংসার শুরু করি। কিন্তু সাময়িক বিরতি দিয়ে আবারও নির্যাতন শুরু হয়।
তামান্না বলেন, স্বামীতো মারেই, সাথে শ্বশুর শাশুড়িও ছাড় দেন না। একদিন শ্বশুর রড দিয়ে আঘাত করে আমার বাম হাতের হাড় ভেঙে দেন। অসহনীয় নির্যাতনে বাবার বাড়ি চলে গেলে পরবর্তীতে আবারও লিখিত অঙ্গীকার নামায় সমঝোতা করে আমাকে স্বামীর সংসারে নিয়ে আসা হয়। তারপর কিছুদিন পর আবারও যৌতুক চেয়ে নির্যাতন শুরু হয়। এরমধ্যে আমি দ্বিতীয় বারের মত অন্ত:সত্তা হয়ে পড়ি।