হবিগঞ্জের মাধবপুরে করোনা মহামারির জন্য এবারের ঈদকে সামনে রেখেও কাঙ্খিত ব্যবসা হচ্ছে না ব্যবসায়ীদের এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা দুঃশ্চিন্তায় কাটাচ্ছে শুধু ঈদ কেন গত বছর থেকে কোনো উৎসবেই ব্যবসা করতে পারেননি তারা
গত বছরের দুটি ঈদেই করোনার সংক্রমণ ছিল এবারও বিধিনিষেধের মধ্যেই কাটছে ঈদ মৌসুম এছাড়া গত বছরসহ দুটি ঈদ, দুটি পহেলা বৈশাখ দূর্গোৎসব বিভিন্ন পূজা পার্বণ সহ বিজয় দিবসেও মানুষ যে আনন্দ উদ্দীপনায় দিবসগুলো উদযাপন করে তা করা সম্ভব হয়নি করোনা মহামারির সংক্রামণ রোধে যেহেতু উৎসবগুলো পালন করা যাচ্ছে না তাই ব্যবসাও একেবারেই বন্ধ ব্যবসায়ীদের।
গতবছর ঈদ পহেলা বৈশাখের ব্যবসা না হওয়ায় এবছর ঈদকে সামনে রেখে পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা কিন্তু হঠাৎ মহামারির সংক্রামণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই ব্যবসাও মার খেয়েছে এ পরিস্থিতিতে সরকারি বিধিনিষেধের মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল থেকে দোকানপাট খোলা থাকলেও ঈদকেন্দ্রিক বেচাবিক্রিতে কোনো গতি নেই। লকডাউন শিথিল করায় বিক্রির আশায় দোকান খুললেও রাজধানীর মার্কেটগুলো ক্রেতাশূন্য বেশিরভাগ পোশাকের দোকানেই বিক্রি একেবারেই নেই ফলে ব্যবসায়ীরা প্রচন্ড হতাশ ঈদের আগে যে রকম ক্রেতা সমাগম মার্কেটে দেখা যায় তার ছিটেফোঁটাও নেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন প্রথমত দীর্ঘসময় মহামারির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে এসেছে এর পাশাপাশি গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সারা দেশের ব্যবসায়ীরা সদর উপজেলায় পণ্য কিনতে আসতে পারছেন না। যে কারণে বিক্রি অনেকটা কম। এদিকে পরপর দুই বছর ব্যবসা না করতে পারলে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবেন বলে মন্তব্য করেছেন অনেক ব্যবসায়ীরা
অনেক ব্যবসায়ীরা বলেন ক্ষতিগ্রস্থ উদ্যোক্তাদের চিহ্নিত করে সরকারের আর্থিক সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন যাতে অন্তত হারানো পুঁজি পেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ পায় না হলে অনেকেই পেশা থেকে হারিয়ে যাবেন।
যদিও লকডাউন শিথিলের সঙ্গে সঙ্গেই মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হাট ও মফস্বলের ঈদ বাজার মাধবপুর বাজারের তুলনায় কিছুটা চাঙ্গা ধানের আবাদ ঘরে তুলতে পারায় গ্রামাঞ্চলে কৃষকের হাতে টাকা এসেছে সে কারণেই উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার সহ মফস্বলের ঈদ বাজার জমে উঠেছে
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় মফস্বলের ঈদ বাজারে সামাজিক দূরত্ব না মেনে এবং স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঈদ বাজারে মানুষের ভিড়ের চিত্র উঠে এসেছে মাধবপুরের সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ বিক্রয়কেন্দ্রই ছিল ক্রেতাশূন্য।
ঈদ পোশাকের বড় আয়োজন থাকে দেশী দশে। সেখানেও ক্রেতা পাওয়া গেল হাতে গোনা কয়েক জন, মাধবপুর বাজারের ফোর-জি কালেকশনের মালিক টিটু সরকার বলেন, সারা দিনে শার্ট পেন্ট মহিলাদের যাবতীয় পোশাক চাহিদা মত বিক্রি হচ্ছে না শুধু জেলা ভিত্তিক গণপরিবহন চালু থাকায় দূর-দূড়ান্ত থেকে ক্রেতা আসতে পারছেন না বিশেষ করে দূর-দূড়ান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন না বলে আমাদের বিক্রির অবস্থা খুব ভালো না। তবে সুরেশ প্লাজা এবং কামিনী এন্ড সন্স মার্কেটগুলোতে বিক্রি না থাকলেও চাহিদা সম্পন্ন কাপড়চোপড় বিক্রি হচ্ছে।
মাধবপুর বাজারে অর্পন কালেকশন এর স্বত্ত্বাধিকারী টিটু সরকার(২) জানান, স্বাভাবিক সময়ে যেমনটা হতো তার চেয়ে সামান্য অধিক পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। চাকরিজীবীরা কম আসছেন কোনাকাটা করতে। নতুন ধান উঠায় কৃষকরাই এখন মূল ক্রেতা ঈদ বাজারের। জনমনে শংকা করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে মাধবপুর বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী তাদের দোকান পরিচালনা করতে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গত বছরের ব্যবসার ক্ষত মেটাতে ধারদেনা করে আবার ব্যবসা গুছিয়ে আনছেন অনেকেই। ঈদের আগে প্রত্যেক দোকানি বিভিন্ন জাতের কাপড়চোপড় বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিলেও করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে
তাদের ব্যবসায় ধস নামতে শুরু করেছে ফলে এভাবে থাকলে তাদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়বে বলে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ হইতেছে।