ঈদ মানেই আনন্দ।এই আনন্দটুকু ভাগাভাগি করতে মানুষ দুর দুরান্ত থেকে ছুটছে পরিবার পরিজনের কাছে।একটি খুশির দিন উপভোগ করার জন্য মানুষের প্রচেষ্টার শেষ নেই।অর্থ সময় ব্যায় করে নিজেদের ইচ্ছেটুকু পূরন করতে ছুটছে শহর ছেড়ে গ্রামের পথে।অথচ ইচ্ছে থাকা সত্বেও অভাব আর পরিবারের শূন্যতায় বুকে একরাশ চাপা কষ্ট নিয়ে চার দেয়ালের মাঝে ঈদ করতে হচ্ছে বাবা মা হারা কোমলমতি শিশু কিশোরদের।
এমনি একটি চিত্র দেখা গেছে,কুড়িগ্রাম শিশু পরিবারের ৪৬ জন শিশু কিশোরদের মাঝে। ৬ বছর থেকে ১৪ বছরের শিশু কিশোরদের জন্য সরকারিভাবে ঈদ আনন্দের সব কিছু ব্যবস্থা থাকলেও ওদের মাঝে নেই ঈদের উচ্ছ্বাস। তাদের কাছে ঈদের দিন বলতে ব্যাতিক্রম কোন দিনই নয়।অনান্য সাধারন দিনের মতো ভাবছে নিবাসে থাকা শিশু কিশোরেরা।অনেকের বাবা মা নেই, কারো মা থেকেও নেই।ইচ্ছে করলেও বাড়ি গিয়ে ঈদের আনন্দ করাটা তাদের কাছে দুঃস্বপ্নই রয়ে যায়।
বাবা মা হারা দুই ভাই লালন মিয়া ও সফিকুল ইসলাম জানান, আমরা গত ৮ বছর ধরে এই নিবাসে আছি। এই নিবাসই আমাদের ঘর বাড়ি।পরিবারে কেউ না থাকায় কোন উৎসবে যেতে পাই না।এখানে সবার সাথে আমরা মিলেমিশে ঈদ আনন্দ করি।ঈদ উপলক্ষে সবাইকে নতুন জামাকাপড় দেয়া হয়েছে। ঈদের দিন ভালো খাবারের ব্যবস্থা আছে।তবুও বাবা মার কথা মনে পড়ে কান্না করি।গ্রামের বন্ধুদের কথা মনে পড়ে। কি করবো কোথায় যাবো।
এখানে আশ্রয়ীত সাইফুর রহমান বলেন,আমার বাবা নেই। মা আছে অন্যের বাড়িতে কাজ করে।মন চায় বাড়ি যেতে কিন্ত বাড়িতে গেলে তো ভালো খাবার পাবো না তাই কষ্ট হলেও এখানে ঈদ করবো।
কুড়িগ্রাম শিশু পরিবারের উপ-তত্বাবধায়ক সুকান্ত সরকার বলেন,এখানে মোট ১০০ জন শিশু কিশোরদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।তন্মোধ্যে বর্তমানে রয়েছে ৪৬ জন শিশু কিশোর।সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি শিশু কিশোরদের জন্য নতুন জামাকাপড় ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঈদের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্পেশাল খাবারের ব্যবস্থা আছে। যাতে তারা পরিবার স্বজনহারা কষ্টটা ভুলে থাকতে পারে। এসব এতিম বাচ্চাদের সব সময় আমরা আদর দিয়ে তাদের দুঃখ কষ্ট ভুলে রাখার চেষ্টা করি।
কুড়িগ্রাম সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন,শিশু- কিশোরেরা যাতে মন খারাপ না করে সেজন্য ঈদের দিন তাদের পছন্দ মতো জামা- কাপড়,ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছি।আমরা ঈদের দিনটিকে তাদের মাঝে আরো আনন্দময় করতে নানান প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।