কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১২টি দোকান ও বাড়িঘর পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অন্তত কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থরা। রোববার বিকেলে একটি জুয়েলারি দোকান থেকে আগুনের শুরু হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে মোরশেদ জুয়েলার্স থেকে আগুন শুরু দেখা যায়। পরে আশপাশের দোকানে আগুন চলে যায়। নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা প্রায় তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে অঅগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় থানা পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। রাত পর্যন্ত সেখানে মানুষের ভীড় দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাজারের কাস্টম মার্কেটের আরাফাত ট্রেডার্স নামের কীটনাশক ও সারের দোকান, ওবায়দুল ভেটরেনারি, মোরশেদ জুয়েলার্স, পূর্নিমা জুয়েলার্সসহ গলামাল, বিকাশের ১২টি দোকান পুড়ে যায়। আশপাশের অনেক দোকানের মালামাল বের করতে নষ্ট হয়ে যায়। মার্কের্টের মালিক মোস্তাফিজার রহমানের বাড়ির সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কাস্টম মার্কেটের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাড়িসহ মার্কেটের প্রায় ১২টি দোকানসহ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সবমিলে কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। আরাফাত ট্রেডার্সের মালিক আব্দুর রশিদ জানান, কিস্তির টাকায় দোকানের মালামাল করেছেন। ৮ লাখ টাকার মালামাল এনে দোকানে রাখার পরপরই সব পুড়ে এখন তিনি নিঃস্ব। ওবায়দুল ভেটেরেনারীর মালিক ওবায়দুল মিয়া জানান, তাদের দোকানের ক্ষতি হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল।
মোরশেদ জুয়েলার্সের মালিক আব্দুল লতিফ জানায়, তার ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে তাদের সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তার ছোট মেয়ে লাবনী আক্তার রংপুর প্রাইম মেডিকেলে ফাইনাল ইয়ারে এবং আরেক মেয়ে রোকসানা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় বর্ষে পড়েন। ছোট মেয়ে পড়েন নবম শ্রেণিতে। এই দোকানের আয় থেকে চলে তাদের সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ। এখন তিনি নিঃস্ব হয়েছেন বলেই কেঁদে ফেলেন তারা।
স্থানীয় আইটি পাঠশালার চেয়ারম্যান কুমার বিশ^জিৎ বর্মণ জানান, ক্ষতিগ্রস্থরা সবাই এতোটাই নি:স্ব হলো যে তারা দাঁড়ানোর মত শক্তি খুজে পাবেনা। মোরশেদ জুয়েলার্সের মালিক আব্দুল লতিফেপর দুই মেয়ে একজন মেডিকেলে একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। দোকান দিয়ে তাদের পড়ালেখা চলতো। এখন পড়ালেখা চলবে কি করে। আরাফাত ট্রেডার্সের আব্দুর রশিদ অনেক ঋণে রয়েছেন। এখন তিনি কিস্তি দিতে পারবেন না।
রাত পর্যন্ত নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজে থাকায় তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমান দিতে পারেননি। পরে বলতে পারবেন বলে জানান লিডার মো. শাহ আলম। এ প্রসঙ্গে রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জানান, বিষয়টি ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়কে জানানো হয়েছে। এখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করা হচ্ছে।