ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আষাঢ় ও শ্রাবণ এ দুই মাস বর্ষাকাল। আকাশজুড়ে কখনও কালো মেঘের ঘনঘটা কিংবা এক চিলতে রোদের মুখ কালো মেঘের ভিড়ে অথবা হঠাৎ করেই মুষলধারায় বৃষ্টি! জ্যৈষ্ঠের প্রখর রোদের পরে এমন প্রশান্তিই বলে দেয় বর্ষাকালের আগমন বার্তা। আষাঢ়-শ্রাবণ মূলত এ দুই মাস বর্ষাকাল। বর্ষার আগমন যখন চারপাশে, তখন তার সঙ্গী হতে গাছে গাছে দেখা মিলে আরেক অতিথির। হবিগঞ্জের মাধবপুরে গ্রীষ্মের প্রখরতা কমাতে যখন আম, জামসহ নানা ফলের ঘ্রাণে মুখর চারপাশ, তার পরই আগমন ঘটে বর্ষার সঙ্গী কদম ফুলের।
সরু সবুজ পাতার ডালে ডালে গোলাকার মাংসলো পুষ্পাধার আর তার থেকে বের হওয়া সরু হলুদ পাপড়ির মুখে সাদা অংশ কদমকে সাজিয়ে তুলেছে ভিন্নভাবে। একটি ফুলের মাঝে এত ভিন্নতার ছোঁয়াতে কদমকে করে তুলেছে আরও গ্রহণযোগ্য। কদম গাছের ফুল ছাড়া আরও রয়েছে ফল। এ ফলগুলো দেখতে অনেকটা লেবুর মতো। কদম গাছের পাতা শীতকালে ঝরে যায় আর কচি সবুজ পাতা নিয়ে আগমন ঘটে বসন্তের। কদম ফুলের আছে আরও অনেক নাম। ললনাপ্রিয়, সুরভী, কর্ণপূরক, মেঘাগমপ্রিয়, বৃত্তপুষ্প ছাড়াও নীপ মানে পরিচিত এ কদম ফুল। কদমের একেকটি গাছ ৪০ থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর সবুজ ঝরঝরে পাতার মাঝে থাকা গোলাকার কদম ফুল বর্ষা ¤øানে আরও রূপসী হয়ে উঠে। কদম ফুল ছাড়া কদম গাছও বেশ উপকারী। কদমের গাছ থেকে যেমন জ্বরের ওষুধ তৈরি করা হয় তেমনি এ গাছ দ্রæত বাড়ে বিধায় একে জ্বালানি কাঠ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
অন্যদিকে কদম ফুল উষ্ণ জায়গায় দ্রæত বাড়ে বিধায় বাংলাদেশ ছাড়া ভারত এবং চীনে এর দেখা মিলে। কদমের আরেকটি সংস্কৃত নাম আছে। এ গাছকে তাই কদম্ব বলেও অনেকে চিনে। যার অর্থ ‘যা বিরহীকে দুঃখী করে’! আবিধানিক অর্থ এমন হলেও মূলত কমদ ফুল প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের মাঝেও সুখ ছড়িয়ে দেয়। তাইতো একরাশ কদম ফুল ছাড়া বর্ষা বার্তা জানাতেও আছে কৃপণতা। কদমের এ রূপের কারণের একে যুগে যুগে কবিরা তাদের কবিতার মাঝে অলঙ্কার হিসেবে সাজিয়েছে। আর লিখে গিয়েছেন ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন হাসান জানান, কদল ফুল যেমন পরিবেশের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে তেমনি এটি জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কদম গাছ পরিচর্যায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে।