ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রাম জেলার সবগুলো নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এতে করে পানি বন্দী হয়েছে জেলার প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। গত দুদিন ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৫-৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ বৃদ্ধি পেয়ে সেতু পয়েন্ট এ বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে দুধকুমার গঙ্গাধর ব্রহ্মপুত্র নদেও। আজ সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে নীচু এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন সহ সবজি ক্ষেত ও আমনের বীজতলা।
চলমান বন্যার পানিতে জেলার রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি, মোহনগঞ্জ, রাজীবপুর, রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা, চরশৌলমারী, বন্দবেড়, চিলমারী উপজেলার অষ্টমীরচর, নয়ারহাট, চিলমারী, রানীগঞ্জ, উলিপুর উপজেলার থেতরাই, দলদলিয়া, গুনাইগাছ, বজরা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়ি, সাহেবের আলগা, হাতিয়া, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা, ভোগডাঙ্গা, ঘোগাদহ, মোগলবাসা, পাঁচগাছি, যাত্রাপুর, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ী, তিলাই, সোনাহাট, পাইকেরছড়া সহ আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী ৬০হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।ফলে নানা দূর্ভোগে রয়েছে এসব এলাকার মানুষ। জেলার প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমির আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম বেগম গঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের বেগমগঞ্জ, চর মশালের চর,বিন্দুর চর,সরকার পাড়ার কিছু অংশ সহ দোয়ালি পাড়া এলাকা ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে প্রায় ৮০০ পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।এবং ৬০ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।এছাড়াও পশু পাখি নিয়ে নানান দূর্ভোগে আছে মানুষ জন।এ পরিস্থিতিতে নৌকা ও ভেলাই হচ্ছে তাদের একমাত্র ভরসা।
কুড়িগ্রাম সদরের ঝাকুয়া পাড়া এলাকার মমিনা বেগম জানান, বাড়ীর চারিদিকে বন্যায় ডুবে যাওয়ায় ছাগল গরু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি।
সোমবার (৩০ আগস্ট) কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ২৬.৮৫ সেন্টিমিটার হওয়ায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২৩.৯৮ সেন্টিমিটার হওয়ায় বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ধরলার ও ব্রাহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য নয়টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) ২শ ৮০ মেট্রিক টন চাল দেয়া আছে। এবং ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে। এবং ৩শ ৬৪টি আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে