কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে তিন বছরের এক কন্যা শিশুকে পুকুরে নিক্ষেপ করেছে এক পাষন্ড পিতা। এঘটনায় অলৌকিক ভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার ও পাষন্ড ওই পিতাকে আটক করে থানায় দিয়েছে স্থানীয়রা।
পরে বৃহস্পতিবার (২ জুন) হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করে ওই পিতাকে কুড়িগ্রাম কোর্টে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামের ইন্তাজ আলীর পুত্রের সাথে প্রায় ৭ বছর আগে দক্ষিণ বাঁশজানী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে সুমা খাতুন (২৫) এর বিয়ে হয়। এসময় সুমনা খাতুন (৫) ও ঝুমরী খাতুন (৩) নামে তাদের দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। কন্যা সন্তান জন্মের ঘটনা নিয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ লেগেই থাকতো। এ অবস্থায় প্রায় ৪ মাস আগে সুমা খাতুন তার সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসে। ঘটনার ৩ মাস পর স্বামী শফিক হোসেনও শ্বশুড় বাড়িতে আসে এবং সেখানেই অবস্থান করতে থাকে।
ঘটনারদিন, গত ২৮ মে রাতে স্ত্রী, ২ কন্যা ও স্বামী শফিক হোসেন রান্না ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে স্ত্রী সুমনা ঘুম ভেঙ্গে দেখে বিছানায় ছোট মেয়ে ঝুমরি খাতুন (৩) ও স্বামী শফিক হোসেন ঘরে নেই। পরে আত্মীয় স্বজনসহ খোজাখুজি শুরু করে এবং ভোরবেলা পার্শ্ববর্তী আলম মিয়ার পুকুরে পানির মধ্যে থাকা শুকনা বাঁশ ধরে আটকে থাকা মেয়েটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে।
এঘটনার পর থেকে স্বামী আত্মগোপনে যায়। পরে গত ১ জুন পার্শ্ববর্তী বাঁশজানী বাজারে শফিককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে শিশু কন্যাটিকে পুকুরে ঢিল মেরে পালিয়ে আসে বলে জানায়।
এঘটনায় ওই দিন বিকেলে থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করলে ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ধৃত শফিক হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং বৃহস্পতিবার (২ জুন) তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করে কুড়িগ্রাম কোর্টে প্রেরণ করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, কন্যা শিশুকে পুকুরে নিক্ষেপের ঘটনায় অাটক পিতার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (২ জুন) হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করে কুড়িগ্রাম আদালত প্রেরণ করা হয়েছে।