চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেজে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল দেবার ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই ব্যবসায়ির নিকট হতে অর্থ হাতিয় নেবার অভিযােগ উঠেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে। গত ৫অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে‘ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভান্ডার’ নামে এক দােকানে প্রতারণাকালে
স্থানীয় জনতার হাতে আটক হন তিনি। পর ভুক্তভাগিদের টাকা ফেরৎ দেবার প্রতিশ্রুতিতে স্থানীয় দুই ইউপি সদস্যর জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়।এ ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ওই অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে এখনও কােনাে ব্যবস্থা না নেয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের থানা মােড় এলাকার‘বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার’এর মালিক মিটু মিয়া জানান,রৌমারী ইউএনও’র কার্যালয়ের অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল হাই নিজেকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে আমার কাছ ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা দিতে না পারলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুই বছরের জেল এবং দােকান সিলগালা করার ভয় দেখান। এসময় দাবিকৃত টাকা তার হাতে নগদ দিতে চাইলে তিনি একটি বিকাশের দােকান থেকে তার দেয়া ০১৯৩৩২১২১২০নম্বর ৩৫ হাজার টাকা পাঠানা হয়। ওই ব্যবসায়ি অভিযােগ করে বলেন,ওই অফিস সহকারী গত বুধবার রাত ৮টার দিকে আমার অনুপস্থিতে দােকান আসেন এবং দােকান অপরিস্কার ও প্রয়ােজনীয় কাগজপত্রের ত্রুটির কথা বলে কর্মচারীদেরকে দােকান বন্ধ করাতে বাধ্য করেন। একপর্যায় উপস্থিত লােকজন তাকে আটক করেন। পর ওই অফিস সহকারী পুলিশি ঝামেলা এড়াতে প্রতারণার শিকার ব্যবসায়িদের টাকা ফেরৎ দেবার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল করিম এবং ২নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল ইসলাম রানা তাকে জিম্মায় নেন। পরের দিন বৃহস্পতিবার ৩৫হাজার টাকা ফেরৎ দেন ওই অফিস সহকারী।
ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক সুজন মিয়া বলেন,গত বুধবার অফিস সহকারী আব্দুল হাই একাই এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল দেবার ভয় দেখিয়ে ৫০হাজার টাকা দাবি করেন। পরে উপায় না পেয়ে ৩০হাজার টাকা তাকে দেই। এসময় দোকানের সামনে লোকজন উপস্থিত হলে তার আচরণে সন্দেহ হলে তাকে আটক করেন।পরে তিনি সােমবারের মধ্যে টাকা ফেরত দেবার প্রতিশ্রুতি দিলে দুইজন ইউপি সদস্য তাদের জিম্মায় নেন। তবে এখন ৩০হাজার টাকা ফেরত দেননি বলেও জানান তিনি।
রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল করিম বলেন,সবকিছু জানাজানির পর ভুল শিকার করে ক্ষমা চান অফিস সহকারী আব্দুল হাই। দুই/তিন দিনের মধ্যে প্রতারণার শিকার ব্যবসায়ির টাকা ফেরত দেবার প্রতিশ্রুতি দেন।
অপর ইউপি ২নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল ইসলাম রানা বলেন,প্রতারণার শিকার বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক মিন্টু মিয়াকে ৩৫হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে অফিস সহকারী আব্দুল হাই।
জনতার হাত আটক হওয়ার কথা স্বীকার করে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল হাই বলেন,চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ফােন পেয়ে ওই দুই দােকান যাই। এসময় লােকজন জড়াে হয়ে আমাকে আটক করে।পরে চাপের মুখ তাদের টাকা ফেরত দেবার প্রতিশ্রুতি দেই।পরের দিন বৃহস্পতিবার ওই টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মােহাম্মদ পূবন আখতার বলেন,বিষয়টি জেনে বিস্তারিত বলতে পারবো।