কুড়িগ্রামে পুলিশ কর্তৃক জোর জবরদস্তিমূরক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও রিমান্ডে নেয়ার হমকির প্রতিবাদে নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলেন করেছেন কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী সমিতির সাব ঠিকাদার মোঃ আসাদুজ্জামান লিটন।
বুধবার ১৬ দুপুরে কুড়িগ্রাম কলেজ মোড়স্থ ইউনাইটেড প্রেস ক্লাব হলরুমে কুড়িগ্রাম-লালমনরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাব ঠিকাদার আসাদুজ্জামান লিটন ও তার পরিবার উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে কুড়িগ্রাম সদর অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ শাহরিয়ার এবং এসআই আহসানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাব ঠিকাদার আসাদুজ্জামান লিটন তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী সমিতির ঢাকার সাভারস্থ মেসার্স মা মনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত¡াধিকারী মোঃ সারোয়ার জাহানের নিকট আমি আমার সম্পাদিত কাজের ২৮ লক্ষ টাকা চাইলে তিনি নানা টালবাহনা শুরু করেন। এক পর্যায়ে গত ২ নভেম্বর কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এবং এসআই আহসান হাবিবের মদদে আমাকে থানায় তুলে নিয়ে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ভূয়া এবং জালিয়াতির মাধ্যমে ইস্যুকৃত অতিরিক্ত মালামাল কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্মাণ স্টোরে জমা দেয়ার জন্য জোরপূর্বক তিন’শ টাকার নন জুডিশিয়ার স্ট্যাম্পে অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর নেন। তাদের বেআইনি কর্মকান্ডে সাড়া না দেয়ায় পরবর্তীতে দফায় দফায় আমি ও আমার পরিবারকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করলে পুরো পরিবার নিয়ে তিন দিন আগে আত্মগোপনে চলে যাই। ঠিকাদার সারোয়ার জাহানের মদদে পুলিশ এবং বহিরাগত লোকের রহস্যজনক চলাফেরায় পাওনা টাকা তো দূরের কথা বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযোগে জানা যায়, কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার খাদেমুল ইসলামের সাথে আঁতাত করে মেসার্স মা মনি প্রকৌশল এর সত্ত¡াধিকারী গোলাম সারোয়ার জাহান সুকৌশলে কার্যাদেশ নং- ডিএনই-১১২এন, কার্যাদেশ নং ডিএনই-১১০, ১১১ (মেসার্স হাসনা এন্টারপ্রাইজ) কার্যাদেশের আওতায় অতিরিক্ত মালামাল ইস্যু দেখান। উক্ত ইস্যুকৃত মালামালের চাহিদাপত্রে ও গেট পাশে ভূক্তভোগী সাব ঠিকাদার আসাদুজ্জামান লিটনের কোন প্রকার সই স্বাক্ষর নাই। সম্পূর্ণরূপে তাকে ফাঁসানোর জন্য চাহিদাপত্র এবং গেট পাশে জাল স্বাক্ষর দেয়া হয়। বিষয়টি তিনি জানতে পেয়ে মূল ঠিকাদার মেসার্স মা মনি প্রকৌশল এর সত্ত¡াধিকারী গোলাম সারোয়ার জাহানকে অবগত করলে তিনি এতে কোনপ্রকার কর্ণপাত না করে উল্টো সাব ঠিকাদার আসাদুজ্জামান লিটনকে ফাঁসানো এবং অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেয়ার হীন মানসিকতায় টালবাহনা পূর্বক হ্যারেজমেন করার উদ্দেশ্যে কালক্ষেপণ করেন। উক্ত মুল ঠিকাদার বৈদ্যুতিক লাইসেন্স করে দেয়ার প্রতিশ্রæতির ১২ লক্ষ টাকা এবং কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যাদেশ নং-০৯-ডিএনই(ডবিøউ)-এল-৪২৭-কেআরএল-০৩-২০১৯০৯২৯-১১২এন এর ব্যাংক ১০% জামানত সহ চূড়ান্ত বিলের পাওনা ২৭ লক্ষ চাওয়ায় মুল ঠিকাদার সারোয়ার জাহান প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পুলিশকে দিয়ে হয়রানি শুরু করেন।
কুড়িগাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নিয়োজিত মেসার্স মা মনি প্রকৌশল এর সত্ত্বাধিকারি গোলাম সারোয়ারের বলেন, লিটনের কাছে পানা টাকার জন্য পনেরো মাস ঘুরেছি। অবশেষে সাব ঠিকাদার লিটনের নামে গত ১৫ নভেম্বর সদর থানায় একটি এজাহার করেছি। মামলার প্রেক্ষিতে হয়তো পুলিশ তাকে খুজতেছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রুহুল আমিন বলেন-কোর্টের আদেশ ছাড়া পুলিশ কাউকে রিমান্ডে নেয়ার এখতিয়ার রাখেন না। যদি কোন পুলিশ সদস্য কাউকে হুমকি ধামকি দেয় সেটা বেআইনি। ভূক্তভোগী ঠিকাদার অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।