
বিডি ২৪ নিউজ অনলাইন: বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের দরপত্রকে ঘিরে বড় ধরনের দুর্নীতি ও কারসাজির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুকুয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৪৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকার এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের জন্য ই-জিপি (ঊষবপঃৎড়হরপ এড়াবৎহসবহঃ চৎড়পঁৎবসবহঃ) পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। টেন্ডার খোলা হয় ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে, দুপুর ২টায় ডাঃ চিন্ময় হাওলাদারের কার্যালয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কাগজপত্র যাচাইয়ে মেসার্স বিথি ট্রেডার্স সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হলেও, কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও টেন্ডার কনসালটেন্ট আরিফুর রহমান ইমন-এর সহায়তায় সিকদার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে কাজের অনুমতি দেন। এতে সরকারি অর্থ অপচয় এবং স্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে ভঙ্গ হয়েছে বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী মোসাঃ সামসুন্নাহার রুবী, মালিক—মেসার্স বিথি ট্রেডার্স, লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন, “ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার ইজিপি প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে নিজের পছন্দের ঠিকাদারকে সুযোগ দিয়েছেন। সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও আমরা বঞ্চিত হয়েছি, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।”
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বরগুনার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জানান, “আমরা অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে নিজ অবস্থান থেকে মন্তব্য দিতে গিয়ে ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করেছি এবং সকল প্রক্রিয়া আইনঅনুযায়ীই হয়েছে।”কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র যাচাই থেকে অনুমোদন পর্যন্ত প্রায় সব ধাপেই ডাঃ চিন্ময় হাওলাদারের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল। তার নির্দেশেই টেন্ডার কনসালটেন্ট ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ‘মনোনীত’ ঠিকাদারকে সুবিধা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরেই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও পছন্দের ঠিকাদার নিয়োগের প্রবণতা চলছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তারা দ্রুত তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।