
বিডি ২৪ নিউজ অনলাইন: স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হচ্ছে—কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন না করেই ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অগ্রিম বিল অনুমোদন করা হয়েছে এবং সেই বিল থেকে বড় অঙ্কের কমিশন নেওয়া হয়েছে। পরে ঠিকাদার মিলিয়ে যায় বলে স্থানীয় অফিসে শোরগোল পড়েছে এবং নানা তথ্য উঠে এসেছে যেগুলো এখন যাচাই করা হচ্ছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকার দৃষ্টি নন্দন প্রকল্পের অধীন মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের কাজটি (প্রকল্প: ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়ন) পেয়েছিল মেসার্স ইফাত এন্টারপ্রাইজ—প্রোপাইটার দালিয়া ইমামের (ঠিকানাঃ ৮৪২, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা)। চুক্তিমূল্য ছিল ৫২,৮৩,৬০,০০ টাকা এবং কার্যাদেশ তারিখ ছিল ২/৫/২০২৪; কাজ সমাপ্তির নির্ধারিত তারিখ ১৫/০৮/২০২৫। তবু প্রকল্পের কাজ না করেই ২,৮৭৫,০০০ টাকার বিল আগেই অনুমোদন করে দেয়া হয়েছে—এমনটাই অভিযোগ। বিলটি অনুমোদনকারী হিসেবে নাম উল্লেখ রয়েছে মো: বেলাল হোসেনের। পরে ঠিকাদার এফেক্টিভভাবে দফায় দফায় নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
অভিযোগকারীরা বলছেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বিভিন্ন সময়ে ঠিকাদারদের সঙ্গে গোপনে বুঝে নিয়ে কাজ না করেই অগ্রিম বিল কেটে দেন; সিনিয়র কর্মকর্তাদেরকে উৎসাহিত করে কমিশন বণ্টন করা হয়—ফলশ্রুতিতে কয়েকটি প্রকল্পে কোটি টাকার বদলে লুটপাট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক্সেঞ্জ অফিসে কর্মরত এক সূত্র বলেছেন, অফিসের বিল বুক যাচাই করে এমন অনিয়মের আলামত পাওয়া গেছে। বর্তমানে ঠিকাদার আত্মগোপনে রয়েছেন, ফলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা কঠিন হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রতিবাদ বা জিজ্ঞাসা করা হলে অভিযুক্ত মো: বেলাল হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এলজিআইডির ঢাকাস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী বাচ্চু মিয়া বলেছেন, তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এসব বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না; তবে তিনি সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করার অনুরোধ করেছেন। বর্তমানে যারা অভিযোগটি করেছেন তারা চাইছেন—চোখ বন্ধ না রেখে গোছানোভাবে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে অন্য কোনো অনিয়ম হওয়া রোধ করা যায়।
এ ঘটনায় স্থানীয় অফিসে শোরগোল আর বিস্তার পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তের দাবি ওঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী মূল অপরাধগুলোর মধ্যে রয়েছে: কাজ করানো ছাড়া অগ্রিম বিল অনুমোদন করা, ঠিকাদারের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে কমিশন নেওয়া, এবং অফিসের বিল নথি জালিয়াতির মাধ্যমে লেনদেন আড়াল করা—যেগুলো নিয়মানুগ তদন্তে প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।